টানা পঞ্চম রাতেও দাঙ্গা-সহিংসতায় অগ্নিগর্ভে পরিণত হয়েছে ফ্রান্স। হামলার চেষ্টা হয়েছে প্যারিসের মেয়রের বাড়িতেও। শনিবার (২ জুলাই) দেশজুড়ে ৭১৯ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। রাজধানীতে পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত থাকলে, মার্সেইয়ে পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘাতে জড়িয়েছে বিক্ষোভকারীরা। খবর সিএনএনের।
চলমান বিক্ষোভে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ফ্রান্সের রাজধানীকে। নগরীর অলিতে গলিতে ২৪ ঘণ্টা টহল দিচ্ছে হাজারও পুলিশ। শনিবার নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর থাকায় অন্যান্য দিনের চেয়ে কিছুটা ভাল ছিল প্যারিসের পরিস্থিতি।
এদিন, প্যারিসের রাজপথে সেভাবে সংগঠিত হবার সুযোগ পায়নি বিক্ষোভকারীরা। নাশকতা এড়াতে সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ রাখা হয় গণপরিবহন। পুলিশি তৎপরতা উপেক্ষা করে সহিংসতার চেষ্টা করলে চালানো হয় ধরপাকড়। রাতে গাড়ি নিয়ে কয়েকজন বিক্ষোভকারী মেয়রের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আমরা এ আন্দোলনকে সমর্থন করি কারণ ফ্রান্সে যা হচ্ছে তা অন্যায়। শুধুমাত্র গাড়ি থামাতে রাজি না হওয়ায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক একটা ছেলেকে মেরে ফেলা হলো। আমার ভাইয়ের সাথেও এমনটা ঘটতে পারতো। আমরা কেউই এখানে নিরাপদ নই।
ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পঞ্চম রাতেও দেশজুড়ে গ্রেফতার হয়েছে সাত শতাধিক বিক্ষোভকারীকে। এদিন, সবচেয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিলো মার্সেইয়ে। সেখানে রাতে পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। বেশ কিছু জায়গায় হয় লুটপাটও। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনী।
ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন এ প্রসঙ্গে বলেন, সব মিলিয়ে ১০টি শপিংমল, দু’শ সুপারমার্কেট, আড়াই’শ ব্যাংক, ফ্যাশন স্টোর, রেস্তোরাঁয় হামলা চালানো হয়েছে। অন্তত ১৫টি সুপার মার্কেট পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমাদের প্রথম দায়িত্ব রাষ্ট্রের নাগরিক ও সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুন ট্রাফিক আইন অমান্যের জেরে এক পুলিশ কর্মকর্তার ছোঁড়া গুলিতে প্রাণ হারান ১৭ বছরের কিশোর মোহাম্মদ নাহেল। এ ঘটনার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা ফ্রান্স। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অভিবাসী হওয়ার কারণেই পুলিশের এমন বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছে নাহেল।
/এসএইচ
Leave a reply