নাটকীয় মোড় নিলো চীনের রাজনীতি। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অপসারণ করা হয় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকে। গত কয়েক মাস তিনি ছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, তার অসুস্থতার কারণেই এ সিদ্ধান্ত। শূন্য পদে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বর্তমান রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ওয়াং ই-কে ফেরত আনা হয়েছে। বিষয়টি ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেও এ ব্যাপারে এখনও মুখ খোলেনি জিনপিং প্রশাসন। খবর সিএনএনের।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আগ্রহে চীনের সবচেয়ে কমবয়সী মন্ত্রী হওয়া কিন গ্যাং দেশটির সরকার কাঠামোয় আলাদাভাবে দৃশ্যমান ছিলেন সবসময়ই। প্রেসিডেন্টের আগ্রহেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, গত কয়েক মাস গণমাধ্যম বা লোকচক্ষুর আড়ালে ৫৭ বছর বয়সী এ কূটনীতিক। তার সর্বশেষ কূটনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ ছিল, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সাথে বৈঠক। এরপরই, গতকাল মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিজিটিএনে আসে তার অপসারণের ঘোষণা। ক্ষমতায় বসার মাত্র ৭ মাসের মাথায় কেনো তার এ পদচ্যুতি- সেটা স্পষ্ট করা হয়নি এখনও।
একই সময় বলা হয়, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই (৬৯) আবার পাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব। ২০১৩ থেকে গতবছর পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন এ কূটনীতিক। তার নিয়োগ নিয়ে দেশের অভ্যন্তর ও আন্তর্জাতিক মহলে এখন চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা- চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও ভালোভাবে কাজ করা যাবে। কারণ, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে ওয়াং ই’র সাথে আমাদের পরিচয়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে পরিবর্তনই আসুক না কেনো; দায়িত্বের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে জাপানের চিফ কেবিনেট সেক্রেটারি হিরোকাজু মাতসুনো বলেন, চীনের সাথে গঠনমূলক এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য, পারস্পরিক বোঝাপড়াও দরকার। আশা করছি, নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ছাড়াও সব পর্যায়ের কূটনীতিকদের সাথে যোগাযোগ থাকবে। কারণ,আমরা সবাই একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
প্রসঙ্গত, ইন্দোনেশিয়ায় জি-৮ এর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যখন কিন গ্যাংয়ের পরিবর্তে ওয়াং ই যোগ দিলেন; তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছিলো। এর আগে, গত ৪ জুলাই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধানের সাথেও তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাতিল হয়। বিশ্লেষকদের ধারণা, শারীরিক অসুস্থতা নয়, বরং শি জিনপিংয়ের সাথে অভ্যন্তরীণ কোন্দলই তার পদচ্যুতির কারণ।
/এসএইচ
Leave a reply