হাতি-মানুষের লড়াইকে ঘিরে উত্তপ্ত কেনিয়া। সম্প্রতি, দেশটির মাসাই জনগোষ্ঠীর আবাসস্থলে হামলা চালায় এক পাল বুনো হাতি। তাদের পায়ের চাপে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক মা ও তার সন্তান। জবাবে, ঘাতক হাতির শুঁড়-দাঁত কেটে নিজস্ব পদ্ধতিতে তাকে শাস্তিও দিয়েছে মাসাইরা। আর, তাতে লঙ্ঘন হয়েছে কেনিয়ার কঠোর বন্যপ্রাণী নীতিমালা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সবপক্ষের সাথে চলছে দেশটির সরকারের সমঝোতা। খবর রয়টার্সের।
কেনিয়ায় পাথর ছুঁড়ে চলছে বুনো হাতির পালকে তাড়ানোর চেষ্টা। কিন্ত, ততোক্ষণে- খ্যাপাটে হাতির তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গেছে পুরো এলাকা। এক পর্যায়ে বিষ মাখানো তীরে বিদ্ধ হয়, বিশালাকার ঘাতক হাতিটি। কেটে নেয়া হয় তার শুঁড়-দাঁত। নৃশংস এ কাণ্ডের সাক্ষী হলো- কেনিয়ার অলগিগিরি অঞ্চল। সেখানে, মাসাই জনগোষ্ঠীর বসবাস। মাসাইদের দাবি- সম্প্রতি হাতির পালের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জনগোষ্ঠীর এক নারী ও তার সন্তান।
ওলগিররি’র বাসিন্দা সইকান কিতুতু এ প্রসঙ্গে বলেন, খরা মৌসুমে পানির জন্য হাতির দল লোকালয়ে চলে আসে। সন্তান প্রসবের সময় মা হাতিরা আরামদায়ক জায়গা খোঁজে। এজন্য, গবাদি পশু এবং স্থানীয়দের রক্ষায় সতর্ক অবস্থানে থাকে বন বিভাগও। সম্প্রতি এই ইস্যুতে বন বিভাগ হস্তক্ষেপ করলে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দফায়-দফায় সংলাপ চলছে। দেখা যাক কী হয়।
কেনিয়ার ওয়াইল্ড লাইফ সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দাদলি কিলুহুলা এ প্রসঙ্গে বলেন, দেখুন এ অঞ্চলে থাকতে হলে মাসাইদেরসাথে সৌহার্দ্য রাখতে হবে। তাদের সাথে নিয়মিত বৈঠকের ব্যাপারে আমরা সম্মত হয়েছি। সেখানে, সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও পর্যটনের সাথে জড়িত প্রত্যেক কর্তা-ব্যক্তির উপস্থিতি জরুরি। তাতে, সবার অধিকার সমুন্নত থাকবে।
কেনিয়ায় কঠোর বণ্যপ্রাণী নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে, ক্ষুব্ধ পরিবেশবিদরা।
কেনিয়ার পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মোরডেকাই ওগারা এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রাণ ও প্রকৃতির সাথে বিরূপ আচরণ মোটেও নতুন কিছু না। কেনিয়ায় কঠোর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন থাকলেও; বিলুপ্তপ্রায় পশুদের শিকার করে লোভী মানুষরা। সেগুলো ক্যামেরায় ধারণ করে, ছড়িয়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে- বন বিভাগের সাথে স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীগুলোর বিবাদ লাগে।পরিবেশবিদরা বলছেন- উন্নয়নের অজুহাতে বন উজাড় করছে স্বার্থান্বেষী একটি মহল। এতে বন্যপ্রাণীদের প্রাকৃতিক পরিবেশ কমছে। ফলে বাধ্য হয়েই আশ্রয় ও খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে যাতায়াত বাড়াচ্ছে হাতিরা। ফলাফল- প্রাণ হারাতে হচ্ছে তাদেরকে।
/এসএইচ
Leave a reply