সাইবার হামলার হুমকি: সতর্কতা সত্ত্বেও নিরাপত্তায় রয়ে গেছে ঘাটতি

|

বিদেশি হ্যাকার গোষ্ঠী, বাংলাদেশে ১৫ আগস্ট সাইবার হ্যাকিংয়ের হুমকি দেয় সপ্তাহ তিনেক আগে। এরপর নড়েচড়ে বসে আইসিটি মন্ত্রণালয়সহ সাইবার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিভিন্ন সংস্থা। বিডি সার্ট থেকে সরকারি ৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদ্যুৎ, টেলিকম, ন্যাশনাল ডাটাবেইজ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানসহ ঝুঁকির তালিকায় থাকা ২৯টি প্রতিষ্ঠানের জন্য, বিশেষ সাইবার নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বিআরটিএ, পল্লী বিদ্যুৎ, ভুমি রেকর্ড অফিস এবং স্বাস্থ্য ও ভ্যাকসিন ব্যবস্থানায় সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে আইসিটি মন্ত্রণালয়।

তবে, এসব প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তায় এখনও ঘাটতি আছে বলে মনে করছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এরকম বেশ কিছু আক্রমণ আমরা প্রতিহত করেছি। এই ধরনের তথ্য আমাদের কাছে আছে যে, ১৫ আগস্ট বড় ধরনের সাইবার হামলা চালাতে পারে বেশ কয়েকটা গোষ্ঠী। এটা ১৫ তারিখ না হয়ে তার আগে-পরে যেকোনো দিন হতে পারে।

আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি। ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ঘাটতি আছে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ যে সিআইআইগুলো আছে, তারা কিন্তু সেসব পালন করছে না। আমরা দুশ্চিন্তা করছি যে, যেসব ইনফরমেশন সিকিউরিটি গাইডলাইন দেয়া হয়েছে, ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন স্ট্রাকচারের জন্য যেসব গাইডলাইন আছে সেগুলো যদি আমরা অনুসরণ না করি এবং তার পরে যদি কোনো আক্রমণের শিকার হয়ে আমাদের অর্থ, তথ্য-উপাত্ত্ব হারাই, তখন কিন্তু আমাদের দেশকে অনেক বড় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে।

সাইবার নিরাপত্তার জন্য গ্রাহক প্রান্তে নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। তাদের অভিমত, স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতায় সাইবার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, গ্রাহকের কিছু সার্ভার থাকে, যে সার্ভারগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তবে আমরা গ্রাহকদের পরামর্শ দেই, প্রতিনিয়ত তাদের সার্ভারগুলোকে আপডেটেড রাখা এবং সঠিক সিকিউরিটি যাতে সেই সার্ভারগুলোতে দেয়া হয়। আমাদের অনেক গ্রাহক তাদের মেইল সার্ভারগুলো ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করে না। কোয়ালিফায়েড ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে এই সার্ভারগুলো দেখাশোনা করানো হয় না।

সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগীতার বলয় আরও বিস্তৃত করার পরামর্শ প্রযুক্তিবিদদের। প্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, এই ১৫ দিনে কিন্তু দেখছি আমরা, বিভিন্ন ধরনের সাইবার হামলার প্রবণতা বেড়েছে বাংলাদেশে। এটা অ্যাডহক বা সাময়িক একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে এখন একটি সাইবার হুমকি আছে বলে নিরাপত্তা জোরদার করলাম, এমন না। আমাদের প্রতিনিয়ত সতর্ক থাকতে হবে। আর, হুমকি থাকলে আরেকটু সতর্কতার সাথে দেখা উচিত।

সাইবার হামলার ঝুঁকি এড়াতে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে নেটওয়ার্ক অবকাঠামোতে।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply