ফের ইউক্রেনের শস্যগুদামে রুশ হামলায় ধ্বংস কয়েক হাজার মেট্রিকটনের খাদ্যপণ্য

|

ইউক্রেনের শস্য গুদামে আবারও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বুধবার (১৬ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। তিনি জানান, দু’দফা নাশকতা চালানো হয়। খাদ্যপণ্যের হিমাগারে আক্রমণের ঘটনায় মস্কো প্রশাসনের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য এসব অভিযোগ-সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে বৃহস্পতিবারও খারকিভে অগ্রসর হয়েছে রুশবহর। খবর সংবাদ সংস্থা এপির।

কিয়েভের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার রাতের অন্ধকারে দানিয়ুব বন্দরের দিকে ছুটে আসে গুচ্ছ-গুচ্ছ ড্রোন আর মিসাইল। ভোরের আলো ফুটতেই স্পষ্ট হয় ধ্বংসাবশেষ। রোমানিয়া সীমান্তের কাছে ইউক্রেনের অভ্যন্তরীন স্থলবন্দরে চালানো হয়েছে হামলা। এতে শস্য গুদামের বড় একটি অংশ পুড়ে গেছে। ধ্বংস হয়েছে হাজার-হাজার মেট্রিকটনের খাদ্যপণ্য।

এসব তথ্য জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, রুশ দখলদাররা আবারও বন্দরে হামলা চালিয়েছে। তারা শুধু শস্যাগার নষ্ট করেনি, বরং বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। শস্য পরিবহন চুক্তি থেকে সরার একমাসের ব্যবধানে ৭ বার হামলা চালালো দেশটি। এর ফলে আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোতে অস্থিরতা ছড়াবে। এশিয়ার বাজারে খাদ্যপণ্যের দামও বাড়বে।

এর আগে আগস্টের প্রথমার্ধেই, দানিয়ুবের বন্দরগুলো থেকে ৮ লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন শস্য ও খাদ্যপণ্য রফতানি করেছে ইউক্রেন। যারমধ্যে অন্যতম, রেনি আর ইজমাইলি পোর্ট। তাই এ হামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে কিয়েভের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও।

বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, ইউক্রেনের শস্য গুদামে রাশিয়ার হামলা নিন্দনীয় অপরাধ। এবার রোমানিয়া সীমান্তের দানিয়ুব পোর্টে চালানো হলো হামলা। এর আগে রেনে-ইজমাইল বন্দরেও তারা নাশকতা চালিয়েছে। বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা নেই। এটা অগ্রহণযোগ্য। তাই পুতিন প্রশাসনকে বলবো, শিগগিরই কৃষ্ণ সাগর চুক্তিতে ফেরত আসুন।

অবশ্য, উৎকণ্ঠা বা সমালোচনাকে তোয়াক্কাই করছে না রাশিয়া। হুমকিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পূর্বাঞ্চলে অভিযানের পরিধি বাড়িয়েছে পুতিন প্রশাসন। তাতে কুপিয়ানস্ক শহরে ছড়িয়েছে উত্তেজনা, বাড়ানো হয়েছে ইউক্রেনের সেনা উপস্থিতিও।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকভ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সমুদ্র এবং বিমান থেকে দূরপাল্লার মিসাইল ছোঁড়া হয়েছে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে। পশ্চিমা অস্ত্র রাখার গুদাম এবং সমরাস্ত্র কারখানা ছিল মূল টার্গেট। বেশ ভালোভাবেই সে লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। তাছাড়া, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্যবাহী জাহাজ চলাচলের ওপরও নজরদারি রাখা হয়েছে। কারণ, এটা রাশিয়ার সাথে বেঈমানি।

এদিকে, নতুনভাবে দোনেৎস্কের একটি এলাকা দখলমুক্ত করারও ঘোষণা দিয়েছে জেলেনস্কি প্রশাসন। জানানো হয়েছে, উরোঝাইনি শহরের সিংহভাগ ফিরেছে ইউক্রেনের হাতে। শুধু তাই নয়, নিপ্রো নদী তীরবর্তী এলাকায়ও ঘাঁটি গেড়েছে তারা। সেখান থেকে নতুনভাবে চালানো হবে কাউন্টার অফেন্সিভ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply