ফিফা প্রীতি ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও মোরসালিনের গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। উত্তাপ ছড়ানোর ম্যাচে ৩টি লাল কার্ড দেখায় রেফারি। যেখানে আফগানিস্তান কোচ আবদুল্লাহ আল মুতাইরিসহ সাইড বেঞ্চের এক খেলোয়াড় দেখেন লালকার্ড। আফগান কোচের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন বাংলাদেশের সহকারী কোচ হাসান আল মামুনও।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) কিংস অ্যারেনায় দ্বিতীয় ও শেষ প্রীতি ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। প্রীতি ম্যাচ হলেও অন্যরকম কারণে উত্তাপ ছড়ায় ম্যাচের ১৯ মিনিটে। মাঠের মধ্যে ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয় দুই দলের দুই ডাগআউট। বাংলাদেশের সহকারী কোচ হাসান আল মামুনের সাথে আগ্রাসী আচরণ করেন আফগানিস্তান কোচ আলব্দুল্লাহ আল মুতাইরি। শেষ পর্যন্ত দুইজনকেই লাল কার্ড দেখান রেফারি।
ডাগআউটের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে মাঠেও, প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার আফগান খেলোয়াড়দের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন বিশ্বনাথ-রাকিবরা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে শুরু হয় বৃষ্টি। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে বক্সের ভেতরে ঢুকেই শট নিয়েছিলেন রাকিব হোসেন। বলের লাইনে থাকা গোলরক্ষক সহজে ফিরিয়ে দেন। পোস্টে প্রথমার্ধে এটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম আক্রমণ। যোগ করা সময়ে কর্নারের পর জামালের শট গোলমুখ থেকে ফেরান এক আফগান ডিফেন্ডার। গোলশূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পর ম্যাচের ম্যাচের ৫২ মিনিটে বা দিক থেকে বল নিয়ে বক্সের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন আফগান ফরোয়ার্ড ফয়সায় শায়েতেশ। তবে বিশ্বনাথ স্লাইড করে বল ক্লিয়ার করলেও আফগানরা কর্ণার আদায় করে নেন। সেই কর্নার থেকে হেডে আফগানিস্তানকে এগিয়ে নেন জাবের শারজা। বাংলাদেশও পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ডান দিক দিয়ে থ্রু বল বাড়ান রাকিব, বল পেয়ে বিশ্বনাথের নিখুঁত ক্রস, ছুটে গিয়ে টোকা দিয়ে বল জালে পাঠান মোরসালিন। এই ফরোয়ার্ডের গোলেই ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ।
গোলের পর মুহুর্মুহু আক্রমণ শানাতে থাকে ক্যাবরেরার শিষ্যরা। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া আফগানিস্তানের বক্সে জটলার মধ্যে শট নিলে আফগান ডিফেন্ডার ফারজাদ আতাইয়ের হাতে বল লাগে। কিন্তু সেটি এড়িয়ে যায় রেফারির চোখ। ফিরতি বল জামাল বল বাড়ান মোরসালিনের দিকে, সেটিও আফগান ডিফেন্ডারের হাতে লাগে যা এড়িয়ে যান রেফারি। যদিও লাইন্সম্যান পতাকা উঠালেও রেফরি সেটি দেখেননি। জামাল-রাকিবরা বারবার রেফারিকে সেটি দেখাচ্ছিলেন তবে রেফারি তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।
ম্যাচের ৭৮ থেকে ৮৫ মিনিটের মধ্যে পাঁচটি কর্নার আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। এ সময় গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আসল কাজটা করতে পারেননি কেউই। বাকি সময়ে আফগানিস্তানের রক্ষণে চাপ দিলেও কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করে নিতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৮৬ মিনিটে ম্যাচের একটি কর্নার থেকে তপু বর্মণের দারুণ হেড আফগান গোলরক্ষক হামিদি রক্ষা করেন। এরপরই আবার ম্যাচে উত্তাপ ছড়ায়, বা দিক থেকে আফগান ফরোয়ার্ড বল নিয়ে বাংলাদেশ রক্ষণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই মারাত্মক ফাউল করে বসেন তপু। রেফরি হলুদ কার্ড দেখালেও তাতে সন্তুষ্ট ছিলেন আফগান ডাগআউটের খেলোয়াররা। বেশি উত্তেজিত এবং অশ্লীল ভঙ্গি দেখানো এক আফগান খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখান রেফারি। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলের ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়ে ক্যাবরেরার দল।
গত ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম প্রীতি ম্যাাচটিও গোলশূন্য ড্র ছিল বলে সিরিজে হারেনি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ফলে ফিফা টায়ার-১ এর দুই প্রীতি ম্যাচ সিরিজ ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দু’দলকে। আগামী অক্টোবরে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
/আরআইএম
Leave a reply