লিবিয়ায় মরদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন উদ্ধারকর্মীরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্থ নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে মিলছে একের পর এক নিথর দেহ। ধ্বংসস্তূপের মাঝ থেকে ক্ষতবিক্ষত মরদেহগুলো বের করে আনছেন উদ্ধারকারীরা। ভয়াবহ এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হতবিহ্বল হয়ে পড়ছেন অনেকে। খবর রয়টার্সের।
উদ্ধারকর্মীদের উদ্দেশ্য একটাই, স্বজন হারানো মানুষগুলো যেন শেষবারের মতো দেখতে পায় প্রিয়জনকে; যাতে ধর্মীয় রীতিতে তাদের সমাহিত করা যায়।
দুর্যোগের পর থেকেই মরদেহের খোঁজে নেমেছেন এই স্বেচ্ছাসেবীরা। একসাথে এত লাশ; এরমাঝে আবার কোনোটা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে আবার কোনটাতে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বীভৎস এই পরিস্থিতিতে আবেগ সামলে রাখতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন উদ্ধারকর্মীদের অনেকেই। কেউ কেউ মানসিকভাবেও ভেঙে পড়ছেন।
ইয়াসের ইব্রাহিম মুহাম্মদ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকর্মী বলেন, যখন মরদেহ বের করে আনি, একজন লিবিয়ান হিসেবে শপথ করে বলছি, কান্না সামলে রাখতে পারি না। এমন মরদেহও পেয়েছি যেগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। যা হয়েছে আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়েছে। মরদেহ টেনে বের করাই এখন কাজ আমাদের। এছাড়া আর কী করতে পারি আমরা?
অবশ্য, বুকে পাথর চেপে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা। এরমাঝে, অলৌকিকভাবে দু-একজন জীবিত উদ্ধারও হচ্ছেন। এই উদ্ধার হওয়া প্রাণগুলোই উদ্ধারকর্মীদের দেয় নতুন উদ্যমে কাজ করার উদ্দীপনা।
আরেক উদ্ধারকর্মী হুসেম এল-দিন মোহামেদ হামাদ বলেন, আল্লাহর ইচ্ছাতে পৃথিবীতে এসেছি, একদিন তার কাছেই সবাইকে ফিরে যেতে হবে। গতকালও ১৮টি মরদেহ বের করেছি। এক নারী ও তার দুই মেয়েকে জীবত উদ্ধার করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, নারীর স্বামীকে জীবিত পাইনি। সমুদ্রে মৃতদেহ খুঁজছি আমরা, তাই কাজটি বেশ কঠিন।
গেলো সপ্তাহের ভয়াবহ দুর্যোগে এ পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে লিবিয়ায়। যাদের ঠাঁই হয়েছে গণকবরে। এছাড়া সমুদ্রে ভেসে গেছে বিপুল মানুষ। নিখোঁজ অন্তত ১০ হাজারের বেশি মানুষের সন্ধানে চলছে উদ্ধার তৎপরতা। জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীন; তাইতো মরদেহের প্রতীক্ষায় প্রহর কাটছে স্বজনদের।
এটিএম/
Leave a reply