ভবনের নকশা অনুমোদনে গাছ লাগানোর শর্ত রাজউকের

|

রাজিব আহমেদ:

ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রতি কাঠায় একটি করে গাছ রোপণের শর্ত দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তবে নগরীতে গাছ কেটে ভবন উঠছে অহরহ। এই অবস্থা বদলাতে চায় রাজধানীর উন্নয়ন দেখভাল করা সরকারি সংস্থাটি। এ ধরনের উদ্যোগ যেনো শুধু লোক দেখানো না হয় সেজন্য শর্ত বাস্তবায়ন নজরদারির পরামর্শ নগর পরিকল্পনাবিদদের।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ-১) মোহাম্মদ সামছুল হকের স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছিল, উপর্যুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বিসি (বিল্ডিং কনস্ট্রকশন) কমিটি কর্তৃক নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে ইমারতের সেটব্যাকে গাছ রোপণের শর্ত প্রদান করতে হবে।

বিল্ডিং কনস্ট্রকশন কমিটি কর্তৃক যে সকল নকশা অনুমোদন করা হবে সে সকল নকশার অনুমোদনপত্রে ইমারতের সেটব্যাকে কাঠা প্রতি ১টি গাছ লাগানোর শর্ত উল্লেখ করতে হবে। ভ্গ্নাংশের ক্ষেত্রে পরবর্তী সংখ্যা উল্লেখ করতে হবে। (যেমন ২.১ কাঠা হলে ৩টি)। এমতাবস্থায় উপরোক্ত বিষয়ে বিল্ডিং কনস্ট্রকশন কমিটি হতে অনুমোদিত নকশার অনুমোদনপত্রে গাছ লাগানোর শর্ত আরোপ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

অর্থাৎ নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে গাছ রোপণের শর্তে বলা হয়েছে, কাঠা প্রতি একটি করে গাছ রোপণ করতে হবে। রাজউকের গাছ লাগানোর এই সিদ্ধান্তটি ৩ অক্টোবর থেকেই কার্যকর হয়েছে।

শর্তে আরও বলা হয়েছে, ভবনের কাজ শেষে অবশ্যই গাছ রোপণ করতে হবে। অন্যথায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে রাজউক। তবে যেসব ভবনের নকশা বা নির্মাণ হয়ে গেছে সেসব ভবন মালিকদেরও গাছ রোপণে উৎসাহিত করা হবে জানিয়েছে রাজউক।

এমন সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বললেও, অনুমোদনের ক্ষেত্রে নতুন বিড়ম্বনার শঙ্কা করছেন ভবন মালিকরা। তাছাড়া এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তারা বলেন, ভালো উদ্যোগ। আমরা অবশ্যই গাছ লাগবো। তবে আরও আগে যদি রাজউক এই প্রকল্প হাতে নিতো তাহলে আরও এলাকায় বনায়ন হতো।

এ বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, নতুন বাড়িগুলোয় যদি প্রতি বাড়িতে কমপক্ষে ৪টা গাছ লাগানো হয় এবং বড় অর্থাৎ ১০ কাঠার প্লটে যদি ১০টি গাছ হয় তাহলে কিন্তু শহরে ধীরে ধীরে গাছের সংখ্যা বাড়বে। এছারা যারা পুরাতন বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করবে তাদের প্লটেও তারা গাছ লাগাবে। একটা সময় দেখা যাবে শহরে আমাদের গাছের চাহিদা আছে তা পূরণ হয়ে গেছে।

তবে নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নির্দেশনা বাস্তবায়ন কঠিন কাজ। রাজউকের ৭ তলা ভবনের পারমিশন নিয়ে ১০-১২ তলা বানাচ্ছে। সেটা নজরদারী করতে পারছে না তারা। সেখানে গাছ লাগাচ্ছে কিনা সেটা মনিটরিং করা রাজউকের জন্য কঠিন। কেননা মনিটরিং না থাকলে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হবে না।

রাজউকের নেয়া গাছ রোপণের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বাসযোগ্য হবে নগরী; বাড়বে সবুজায়ন। তাই গাছ কেটে আর নদী-জলাভূমি ভরাট করে ভবন নির্মাণ রোধে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।

এমএইচ/এটিএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply