এক যুগেও শেষ হয়নি বিআরটির ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার প্রকল্প

|

আল-আমিন হক অহন:

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এয়ারপোর্ট টু গাজীপুরের বিদ্যমান সড়কের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে আলাদা লেন। যাত্রী পরিবহনের জন্য চমকপ্রদ সেবা দিতে প্রায় এক যুগ ধরে চলছে নির্মাণযজ্ঞ। তবে প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)। দীর্ঘদিনের কাজে দূষণ, যানজট আর নানা ভোগান্তি তৈরি করা বিআরটি প্রকল্প কতোটা কাজে দেবে? ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পের আদ্যপান্তের প্রথম পর্ব থাকছে আজকের প্রতিবেদনে।

সম্পূর্ণরুপে চালু হলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন বিআরটি কোম্পানির ১৩৭টি বিশেষ বাস চলবে সড়কের এই লেন ধরে। এ প্রকল্পে সড়কের যে লেনে বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের বাস চলবে, সেই লেন অন্য কোনো যানবাহন ব্যবহার করতে পারবে না। নির্ধারিত বাসগুলোর জন্য সিগন্যাল বা ক্রসিং থাকবে না। এক কথায় যাত্রীসেবায় ডেডিকেটেড গণপরিবহন ব্যবস্থা হবে এটি।


বিআরটির বাস যেন যানজট এড়িয়ে নির্বিঘ্নে চলতে পারে, তার জন্য এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুরের শিববাড়ি পর্যন্ত ২০.৫ কিলোমিটার সড়কের মাঝখানে এমন লেন নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লেনে যেন অন্য যানবাহন ঢুকতে না পারে, তার জন্য দেয়া হয়েছে ব্যারিকেড। এই বাসগুলোর জন্য যে স্টেশন করা হচ্ছে, সেখানে অন্য কোনো যান দাঁড়াতেও পারবে না।

যাত্রীদের জন্য এমন ব্যবস্থা দেশে এই প্রথম। এই প্রকল্প সম্পন্ন হলে লেনের দুই পাশ দিয়ে চলবে গণপরিবহন। মাঝখান দিয়ে চলবে নির্দিষ্ট কিছু বাস। থাকবে স্টেশন, তাও আবার উড়াল সড়কে। তার মধ্যে সাতটি স্টেশন থাকবে মাথার ওপরে আর ১৮টি থাকবে নিচে।

সড়কের মাঝখানে স্টেশন হওয়ায় এই বাসগুলোও হবে বিশেষ। বাসগুলোর ডান দিক থেকে ওঠা নামা করবে যাত্রীরা। তাই বাসের দরজাও থাকবে ডান পাশে। এছাড়া, স্টেশনগুলোতে থাকবে স্বয়ংক্রিয় টিকিট কেনার ব্যবস্থা। র‍্যাপিড পাস দিয়েও ভ্রমণ করতে পারবেন যাত্রীরা।

প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার কিলিমোটার উড়ালসড়কসহ থাকছে সাতটি ফ্লাইওভার। যার অধিকাংশই ইতোমধ্যে সাধারণ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, এসব বাসে বসার জন্য ৩০টি করে সিট থাকবে। বাকি জায়গায় কমপক্ষে ৫০ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে পারবে। যেহেতু কোনো বাধা ছাড়াই বাসগুলো চলতে পারবে, তাই এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনের দূরত্ব অল্প সময়ের। প্রথম স্টেশন থেকে শেষ স্টেশনে যেতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে ৪০ মিনিট।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি ত্রিশ সেকেন্ড পরপরই মিলবে বাস। প্রতি ঘণ্টায় উভয় দিক থেকে ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। এতে গণপরিবহন ব্যবহারে আকৃষ্ট হবে মানুষ। কমবে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারের প্রবণতাও।

তবে এ প্রকল্পের গাজিপুর অংশের প্রথম স্টেশন শিববাড়ি অংশের কাজ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাই এই প্রকল্প এখনও যাত্রীদের কাছে স্বপ্নই রয়ে গেছে। কবে নাগাদ এই স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দেবে? উত্তর খোঁজা হবে পরের পর্বে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply