ফাইনালে ভারতের জয়ের নায়ক হতে পারেন যারা

|

ফাইল ছবি

নুরুজ্জামান খান:

স্বাগতিক ভারত ও ‘মাইটি’ অস্ট্রেলিয়ার শিরোপার লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে পর্দা নামছে বিশ্বকাপ আসরের। আর মাত্র কিছুক্ষণের অপেক্ষা। দুপুর আড়াইটায় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বৈশ্বিক আসরের ফাইনালে মাঠে নামবে দু’দল। ম্যাচটি যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে সেটি আন্দাজ করাই যায়।

অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকের মতে এই ম্যাচে ফেভারিট ভারত। নিজেদের মাঠ, তারপর দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন খেলোয়াড়রা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই সেরা ভারত। চলতি আসরে খেলা ১০ ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতেছে রোহিত শর্মার দল। প্রতিটিতেই জয় বড় ব্যবধানের। তাই তো কেউ কেউ বলছেন, ভারতের এই দল দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী। যদিও পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের শিরোপার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। ‘বিগ ম্যাচ’র দল অজিদেরও অনেকেই এগিয়ে রাখছেন।

ফাইনাল ম্যাচে ভারতের হয়ে কে জ্বলে উঠবে, এমন আলোচনাও চলছে। ব্যাটিংয়ে কোহলি, রোহিত শর্মা, আইয়ার কিংবা রাহুল। আর বোলিংয়ে শামি, বুমরাহ, কুলদীপ ও জাদেজা যেকোনো একজনই বদলে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য।

ভিরাট কোহলি:
বর্তমান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ভিরাট কোহলি। চলতি আসরেও রয়েছেন ফর্মের তুঙ্গে। সেমিফাইনাল ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ওডিআইয়ের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড নিজের দখলে নিয়েছেন তিনি। ‘মাস্টারব্লাস্টার’ শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ডকে পেছনে ফেলে ৫০ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

আসরে ১০ ইনিংসে ১০০-এর বেশি গড়ে তুলেছেন ৭১১ রান। ৩টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ৫টি ফিফটি। শচীনের এক আসরে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও নিজের নামে লিখিয়েছেন এই তারকা। তাই ফাইনালে অজিদের মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন কোহলি।

রোহিত শর্মা:
‘হিটম্যান’ রোহিত। ভারতীয় অধিনায়ক সামনে থেকেই দলকে টেনে নিচ্ছেন। ব্যাট হাতেও রয়েছেন দারুণ ছন্দে। পাওয়ার প্লে’তে ঝড় তোলায় পটু তিনি। শুরুতেই প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ওপর আগ্রাসী হয়ে মনোবল ভেঙ্গে দিতে পারেন ভারতীয় অধিনায়ক।
আসরে ১০ ইনিংসে ব্যাট করে তুলেছেন ৫৫০ রান। গড় ৫৫। আর স্ট্রাইক রেট ১২৪ দশমিক ১৫! আগ্রাসী এই ব্যাটার চলতি আসরে ২৮টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন, পাশাপাশি চার মেরেছেন ৬২টি। ভারতীয় সমর্থকরা অবশ্যই শুরুতে রোহিত ঝড় দেখতে উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করবেন।

শ্রেয়াস আইয়ার:
ভারতের তরুণ ব্যাটার হলেও ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে পরিপক্ক ইনিংস খেলার সামর্থ্য রয়েছে আইয়ারের। সিঙ্গেলসে রান তোলার সঙ্গে ঝড় তোলাতেও পারদর্শী এই তরুণ। এই আসরে ১০ ইনিংসে তিনি ৭৫-এর ওপর গড়ে করেছেন ৫২৬ রান। স্ট্রাইক রেটও ঈর্ষণীয়, ১১৩ দশমিক ১২! তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৪টি ছক্কা এবং ৩৬টি চার। টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত রান তোলা ব্যাটাদের তালিকায় তিনি রয়েছেন ৭ নম্বরে। তবে এই ম্যাচে তালিকার ওপরে উঠে আসার সুযোগ রয়েছে তার সামনে।

কেএল রাহুল:
ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে ঠাণ্ডা মাথায় যে কয়জন ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেন তাদের মধ্যে কেএল রাহুল অন্যতম। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। কখনো উইকেটে কামড়ে পড়ে থাকা আবার দলের প্রয়োজনে ‘টর্নেডো’ ইনিংসও খেলতে পারেন রাহুল। চলতি আসরে ৯ ইনিংসে ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছেন তিনি। ৭৭ দশমিক ২০ গড়ে তুলেছেন ৩৮৬ রান। স্ট্রাইক রেট প্রায় ১০০ ছুঁইছুঁই।
এছাড়া ওপেনার শুভমান গিলও রয়েছেন দারুণ ছন্দে। তাই তিনিও মাথার কারণ হতে পারেন তিনি।

মোহাম্মদ শামি:
হার্দিক পান্ডিয়ার জন্য শুরুতে একাদশে সুযোগ মেলেনি মোহাম্মদ শামির। বাংলাদেশ ম্যাচে ইঞ্জুরিতে পড়েন এই অলরাউন্ডার। পরের ম্যাচে সুযোগ পান শামি। সুযোগ পেয়ে বেঞ্চে বসিয়ে রাখার জবাবই যেন দিচ্ছেন শামি। মাত্র ৬ ম্যাচ খেলেই আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এই পেসার। ৯ দশমিক ১৩ গড়ে তুলে নিয়েছেন ২৩ উইকেট। বিশ্বকাপের এক আসরে তিনবার পাঁচ উইকেট নিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন সবার ওপরে। পাশাপাশি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৪চার পাঁচ উইকেট শিকারি একমাত্র বোলার তিনি। এই আসরে একটি ম্যাচে ৪ উইকেটও নিয়েছেন তিনি। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেট নিয়ে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন কিউইদের।

জাসপ্রিত বুমরাহ:
ফাইনাল ম্যাচে অজিদের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারেন বুমরাহ। ১০ ম্যাচে তার উইকেট ১৮টি। গড় ১৮ দশমিক ৩৩। পাঁচ উইকেটের দেখা না পেলেও এক ইনিংসে তার ৪টি উইকেট রয়েছে। তাই সামি-বুমরাহ জুটি ভারতের জয়ের নায়কও হতে পারেন।
অন্যদিকে, স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাও নিয়মিত উইকেট পাচ্ছেন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply