আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে বিরোধী দলগুলোর নেতারা?

|

শাকিল হাসান:

ঘোষণা হয়ে গেছে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল। তবে একতরফা তফসিল দাবি করে নির্বাচন ও তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দল। তারা মনে করছেন, প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়েই ঠেকানো যাবে আসন্ন নির্বাচন। দাবি করেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে এই নির্বাচনে আগ্রহ নেই জনগণের।

সমকালীন রাজনীতি নিয়ে বিরোধী দলের এসব নেতারা বলছেন, ২৮ অক্টোবরের পর আন্দোলন স্তিমিত হয়নি। বরং সরকারের আক্রমণাত্মক নীতির কারণে জনগণ রাজপথে নামতে পারছে না। তাই অন্যভাবে কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

ঠিক এক মাস আগে গত ২৮ অক্টোবর সবশেষ প্রকাশ্যে বড় জমায়েত করেছিলে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। ঘটে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা। মামলা দায়ের হয় বিভিন্ন থানায়, চলে ধরপাকড়।

দাবি আদায়ে মরিয়া বিএনপি হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয় অবরোধ-হরতালের পুরনো কর্মসূচি। ঝটিকা মিছিল আর বিচ্ছিন্ন সহিংসতা দিয়েই চলছে তাদের এসব কর্মসূচি। তবে আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখনকার সরকার অনেক বেশি নৃশংস। অনেক হামলাবাজ, অনেক আক্রমণাত্মক। ফলে জনগণ সেভাবে রাস্তায় নামতে পারছে না। তবে মানুষের যে সমর্থন আমরা পাচ্ছি তাতে খুব শীঘ্রই একটা অভ্যুত্থান ঘটবে।

বছরজুড়েই সরকার বিরোধী নানা ইস্যুতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো প্রকাশ্যে বড় ধরনের মিছিল ও সমাবেশ করেছে। তবে ২৮ অক্টোবরের পর অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। তবে এ বিষয়ে একমত নন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, আমরা হতাশ হইনি, আন্দোলনও স্তিমিত হয়নি। তার কারণ আমাদের কর্মসূচি এখন অন্যভাবে চলছে। আমরা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। মাঝখানে কয়েকদিন হরতাল দিয়েছিলাম, আবার সামনে হয়তো হরতাল দেয়া হতে পারে। এই আন্দোলন তো থেমে যাবে না।

এসবের মধ্যেই ঘনিয়ে আসছে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন। আন্দোলন-অবরোধের মাঝেই ঘোষণা করা হয়েছে তফসিল। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি দল নিচ্ছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। প্রার্থীও মনোনয়ন দিয়ে দিয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া দলগুলো। নিয়মানুযায়ী নির্বাচনী কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছে ইসি।

এ বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করা তো নির্বাচন ঠেকানো। নির্বাচনের বিরুদ্ধে মানুষের যে বিক্ষোভ, আন্দোলন আমরা সেগুলোই পালন করছি। নির্বাচন বাতিল হলেই এই আন্দোলনের বিজয় হবে। তবে কখন বিজয় অর্জন হবে সেটা তো দিনক্ষণ ঠিক করে বলা যায়না।

সামনের দিনগুলো আরও কঠিন হতে পারে তা জানেন বিরোধীরাও। বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই দাবি আদায়ে অনড় তারা। খুব শিগগিরই বদলে যাবে রাজনীতির গতিপথ এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তারা।

অন্যদিকে, রাজপথে আন্দোলন চাঙ্গা রাখতে নতুন কর্মসূচির কথাও ভাবছেন বিরোধী দলের নেতারা। এ বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, জনগণ কীভাবে রাস্তায় নামবে তার পথগুলো অনুসন্ধান করা হচ্ছে এবং নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে জনগণ রাস্তায় নামছে।

এমএইচ/এটিএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply