যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিতর্কিত নোবেল বিজয়ী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। খবর রয়টার্স, এএফপির।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রভাবশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন কিসিঞ্জার। মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে নিজের অমোঘ স্বাক্ষর আঁকতে পেরেছেন। মার্কিন-সোভিয়েত স্নায়ুযুদ্ধের ইতিহাসের অন্যতম রূপকার হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। তবে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
১৯২৩ সালের ২৭ মে জার্মানির এক ইহুদি পরিবারে জন্ম কিসিঞ্জারের। পরে তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পালিয়ে যায়। ওই শহরেই বেড়ে ওঠেন কিসিঞ্জার। তিনি ছিলেন হার্ভার্ডের একজন অধ্যাপক, যিনি পরবর্তীতে রাজনীতিতে (রিপাবলিকান) নাম লেখান।
তিনি ছিলেন ৫৬তম মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের আমলে দায়িত্ব পালন করেন ‘মার্কিন কূটনীতির প্রতীক’। তিনি ছিলেন ৮ম মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক।
তার প্রচেষ্টায় চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা, মার্কিন-সোভিয়েত অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা, ইসরায়েল ও তার আরব প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্প্রসারিত সম্পর্ক এবং উত্তর ভিয়েতনামের সাথে ‘প্যারিস শান্তি চুক্তি’ ছিল কিসিঞ্জারের কূটনৈতিক দক্ষতার প্রমাণ।
১৯৭৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান হেনরি কিসিঞ্জার। উত্তর ভিয়েতনাম ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার যুদ্ধ বিরতি এবং সেখান থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের প্রেক্ষাপটে তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিতর্কিত এই সিদ্ধান্তের জেরে পদত্যাগ করেন নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির দুজন সদস্য।
সমালোচকরা মনে করেন, কিসিঞ্জার শান্তি প্রণেতা ছিলেন না, বরং যুদ্ধের ব্যাপক প্রসারে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রেখেছিলেন। নানা বিতর্কিত ভূমিকার জন্য অনেকেই তাকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিযুক্ত করে থাকেন।
/এএম
Leave a reply