নিখোঁজের প্রায় ৩০ বছর পর বাড়ি ফিরেছেন মেহেরপুর সদরের সুবিদপুর গ্রামের রেজিয়া খাতুন। গত ১০ নভেম্বর শোলমারি সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন তিনি। এতোদিন পর হঠাৎ তার আগমনে আশপাশের গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যের।
তবে, বাড়ি ফিরে রেজিয়া অভিযোগ করেছেন তার স্বামী আজগর আলী ভারতের এক পাচারকারীর কাছে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিলো। এ ঘটনায় ১৬ নভেম্বর তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন।
রেজিয়া খাতুন জানান, তিনি এতোবছর কাশ্মিরে পাচারকারীর কাছে বন্দি ছিলেন। ৩০ বছর আগে দ্বিতীয় স্বামী আজগর আলী ও প্রতিবেশী জয়নাল তাকে বিক্রি করে দেয়। কয়েক মাস আগে অসুস্থ হলে গোপনে চিকিৎসা নিতে যান রেজিয়া। সেখানে মেহেরপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তির মাধ্যমে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি। পরে অর্থের বিনিময়ে রেজিয়া মুক্তি পান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রেজিয়া বলেন, মেহেরপুরের একজনের সাথে পরিচয় হয়েছিলো। তার কাছে আমি বাবা-ভাই ও গ্রামের ঠিকানা দেই। বলি- এই ঠিকানাটা বের করে দিতে পারলে অনেক উপকার হবে। তার মাধ্যমেই আমি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছি।
এদিকে, রেজিয়াকে পেয়ে আনন্দ বইছে তার স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে। পাচারের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা।
তার মেয়ে বলেন, আমরা মা থাকতেও মা পাইনি। এতোদিন পর কাছে পেয়েছি। এই ঘটনার বিচার চাই আমরা।
তবে রেজিয়াকে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত স্বামী আজগর আলী।
তিনি বলেন, আমি যদি বিক্রি করতাম তাহলে তো আমার নামে থানায় একটা ডায়েরিও থাকতো। তারা তো জানতোই আমার সাথে বিয়ে হয়েছিলো। এখানে তাদের একটা ষড়যন্ত্র আছে। কী ষড়যন্ত্র তারাই ভালো জানে।
ভুক্তভোগীকে সব ধরণের আইনি সহায়তার আশ্বাস দিয়ে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি একেএম আছাদুজ্জামান বলেন, মানবাধিকার কমিশন ও সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতা নেবো। আসামি পক্ষ যাতে ভুক্তভোগীর কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
/এনকে
Leave a reply