লামিয়া তিথি:
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ পাশের ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম তলায় দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে হাসপাতালের রোগী, স্বজনসহ কর্মরত স্টাফদের মাঝে। অবশ্য আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করছেন হাসপাতালের পরিচালক। এদিকে, এই ফাটলের দায় নিচ্ছে না ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা এন্টারপ্রাইজ।
গত সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালের দিকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ পাশের ষষ্ঠ, সপ্তম, ও ৮ম তলার দেয়ালের এই ফাটল চোখে পড়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালের রোগী-স্বজনসহ কর্মরত স্টাফরা। হাসপাতাল ও আশপাশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এ খবর।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বর্ধিত এই ভবনটি আগে মূলত ছিল চার তলা বিশিষ্ট। ২০১৮ সালে আরও চার তলার কাজ শুরু হয়, যা হস্তান্তর হয় ২০২১ সালে।
এ বিষয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মীর জামাল বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নির্মাণ কাজ চলছে, যা এই হাসপাতাল থেকে অন্তত ৫০ ফিট দূরে হবে। সেখানে পাইলিংয়ের কাজ চলার জন্যই এই ফাটল ধরেছে। পদ্মা এন্টারপ্রাইজ এখনও এই হাসপাতালের কাজ করছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্যও তারা কাজ করছে। তবে ফাটল ধরার কারণে রোগীদের কোনো অসুবিধা হবে না।
এদিকে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দায় নিতে নারাজ। এক বছরের মধ্যে কিছু হলে ঠিক করা সম্ভব হতো উল্লেখ করে পদ্মা এন্টারপ্রাইজের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল কাদের বলেন, আমরা ভবনটি হস্তান্তর করার পর এক বছরের মধ্যে কিছু হলে তার দায় আমাদের নেয়ার নিয়ম আছে। কিন্তু এখন আর এ বিষয়টি আমাদের ওপর বর্তায় না।
এদিকে, ভবনটি নির্মাণে খুবই নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ ইশতিয়াক আহমদ জানান, কর্তৃপক্ষ দাবি করছে পাশের পাইলিংয়ের কম্পনের কারণে এই ফাটল ধরেছে। কিন্তু এই ফাটল ধরেছে উপরে নতুন করে যেসব তলা করা হয়েছে সেখানে। অর্থাৎ এখানে বোঝাই যাচ্ছে উপরের তলাগুলো নির্মাণে নিম্নমানের দ্রব্য ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে।
ফাটলের খবর ছড়িয়ে পড়ায় ভবন পরিদর্শনে যায় গণপূর্ত অধিদপ্তরেরর প্রকৌশলীরা। এনিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন জানান, গুণগত মান নিশ্চিত করে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তবে এই ফাটলের কারণ আগে খতিয়ে দেখতে হবে। তারপর কারোর গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাসপাতালটিতে ফাটল ধরলেও এখন পর্যন্ত সরানো হয়নি কোনো রোগীদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফাটল ধরলেও রোগীদের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে আতঙ্ক বিরাজ করছে হাসপাতালটির রোগীসহ কর্মরত স্টাফদের মধ্যে।
এসজেড/
Leave a reply