এবারের নির্বাচনে থাকছে না বিনাভোটে জয়ের সুযোগ, সব আসনেই একাধিক প্রার্থী

|

নূরনবী সরকার:

এবারের নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ের সুযোগ থাকছে না কারও। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর সব আসনেই আছেন একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী। বিএনপি অংশ না নিলেও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র, জাতীয় পার্টি, তৃণমূলসহ কয়েকটি দলের হেভিওয়েটদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে পারেন নৌকার প্রার্থীরা। তাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পরও ভোটার সমীকরণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।

নিক্সন চৌধুরী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই। ১৪ ও ১৮ সালে তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে এমপি হন। ফরিদপুর ৪ ভাঙ্গা সদরপুর, চরভদ্রাসন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনি। এখানে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ।

ফরিদপুর-৩ জেলা সদর আসনে নৌকার নতুন প্রার্থী শামীম হক। এখান থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন শিল্পপতি এ কে আজাদ। বরিশাল-৫ এ নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়ন বৈধ হয়েছে সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর।

বরিশাল-২ আসনে নৌকার টিকিট পেয়েছেন তালুকদার ইউনুস। আর বরিশাল-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সরদার খালেদ স্বপন। বরিশাল-২ ও ৩ এ মনোনয়ন নিয়েছেন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, স্যোসাল মিডিয়ার পরিচিত মুখ ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন হবিগঞ্জ ৪ চুনারুঘাট-মাধবপুর থেকে। এখানে নৌকার প্রার্থী বিদায়ী পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে সিলেট ৬ আসন। এখানে নৌকার প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এখান থেকে এমপি হতে চান তৃণমূল বিএনপির সভাপতি শমসের মুবিন চৌধুরী। তিনিও মনোনয়ন সংগ্রহ করে টিকে গেছেন।

তৃণমূলের মহাসচিব সাবেক বিএনপি নেতা তৈমুর আলম এমপি হতে চান নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে। এখানে নৌকার ম্যান বিদায়ী পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর।

নিজেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থ দাবি করা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ ইব্রাহীম কক্সবাজার-১ পেকুয়া-চকোরিয়া আসন থেকে নমিনেশন সংগ্রহ করেছেন। দলটির মহাসচিবও দাখিল করেছেন একই আসনে। আসলে কে হবেন দলের প্রার্থী, তা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিশ্চিত করবে কল্যাণ পার্টি। এখানে নৌকার প্রার্থী সালাহউদ্দিনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

দীর্ঘ ৪৫ বছর বিএনপি করে সম্প্রতি জেলে যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। জেলখানা থেকে বেরিয়ে নৌকার টিকেট পান ঝালকাঠি-১ আসন থেকে। এই আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি বিএইচ হারুনের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সাভার ও আশুলিয়া নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৯ আসন। এখানে নৌকার মাঝি বিদায়ী ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। সাবেক এমপি মুরাদ জং-ও এবার প্রার্থী হিসেবে টিকে গেছেন স্বতন্ত্র হিসেবে।

সাভার, কেরাণীগঞ্জ, আশুলিয়ার অংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা ২ আসন। এখানে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রার্থী হন নৌকার। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা শাহীন চেয়ারম্যান।

গাজীপুর-১ আসনে বিদায়ী মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক নৌকার প্রার্থী। আর গাজীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিদায়ী ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

এছাড়া যাদের মনোনয়ন যাচাই বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে, তারা অনেকেই আপিল করবেন। তারা মনোনয়ন ফিরে পেলে আরও কিছুটা গরম হতে পারে নির্বাচনের মাঠ। ফলে একটি আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্তত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেতার সুযোগ থাকছে না।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply