গাজা যখন পুড়ছে, সেসময় জাঁকজমক আয়োজনে নরওয়েতে হলো নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান। ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার দুই সন্তান কিয়ানা ও আলি। আয়োজন ‘শান্তি পুরস্কার’ হলেও সেখানে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত ছিল বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত ও মানবাধিকার বিরোধী কর্মকাণ্ডটি। এই আয়োজনে একটিবারও উচ্চারণ করা হয়নি গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার ইস্যুটি। শান্তিতে নোবেলজয়ী কিংবা আয়োজকদের কারোর কণ্ঠেই ছিল না ফিলিস্তিনি হত্যাযজ্ঞের বিষয়টি। মানবকল্যান, অধিকার আর শান্তির প্রসঙ্গ বারবার এলেও, সবাই এড়িয়ে গেছেন বিপর্যস্ত গাজাকে। খবর আল জাজিরার।
জাঁকজমক আর নজরকাড়া আয়োজনে এদিন মুখর ছিল সিটি হল। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিতরণী উপলক্ষ্যে পুরো হলে রাজকীয় সাজসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়। নরওয়ের রাজা-রানি তো বটেই, রাজপরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি ছিলেন বিশ্বের নানা দেশের মানবাধিকার কর্মীরাও। বাদ পড়েননি জনপ্রিয় ও আলোচিত ব্যক্তিরাও। অথচ নামে শান্তি পুরস্কার হলেও বর্তমানে যে অঞ্চলটিতে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, সে প্রসঙ্গে নীরব ছিলেন প্রত্যেকেই।
শান্তিতে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদির ছেলে আলি রহমানি এদিন বলেন, ইরানের জনগণ দৃঢ় প্রত্যয়ী। তারা নিপীড়ন এবং কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে জয়ী হবেই। আমি বিশ্বের সব মানবাধিকার কর্মী, সংগঠন এবং শক্তিদের আহ্বান করছি। আপনারা আমাদের পাশে থাকুন। আমি নিশ্চিত একদিন না একদিন সব নিপীড়ন থেকে মানুষ মুক্তি পাবেই।
এদিকে, গাজা ইস্যুটি সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে গেছে নোবেল শান্তি পুরস্কারের আয়োজকরাও। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার বুলি আউড়ানো হলেও, বর্তমানে সবচেয়ে অস্থিতিশীল অঞ্চল নিয়ে তারা নিশ্চুপ।
নোবেল কমিটির চেয়ারপার্সন বেরিট অ্যান্ডারসন বলেন, বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নার্গিস মোহাম্মদি। পাশাপাশি বৈষম্য দূর করতে তার নেতৃত্ব পৃথিবীকে দেখিয়েছে নতুন পথ। তার বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণেই ইরানে নারীদের পোশাক নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। যা পুরো বিশ্বে তুলেছিল আলোড়ন।
এর আগে, চলমান নানা সংকট আলোচিত হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। ২০২২ সালেও নোবেল শান্তি পুরস্কার আয়োজনে আলোচিত হয় ইউক্রেনে-রুশ আগ্রাসনের বিষয়টি।
এসজেড/
Leave a reply