শরিফুল ইসলাম খান:
২৮ অক্টোবরের পর থেকেই বদলে গেছে দেশের রাজনৈতিক সমীকরণ। কিন্তু পরিস্থিতি এতোটা জটিল হবে, তা হয়তো ভাবতেও পারেননি বিএনপি নেতাকর্মীরা। গাজীপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জানালেন মাঠের বাস্তবতা।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মতো একটা ভয়াবহ অবস্থা চলছে। বিএনপি করলেই তাকে নির্যাতন করা হয়। নেতা-কর্মীরা পলাতক অবস্থায় আছে। সন্তানকে না পেয়ে মাকে ধরে নিয়ে যায়, ছেলেকে না পেয়ে বাবাকে হত্যা করা হয়; অরাজক অবস্থা চলছে।
এমন প্রতিকূলতায় লম্বা সময় ধরে আন্দোলন টানতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। মামলা-হামলা আর জেল-সাজায় কোণঠাসা তারা। নানামুখী অনিশ্চয়তায় বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম বলেন, আমরা নিপীড়নের মধ্যে আছি। গুম-খুন, জেল-জুলুমের মধ্যে আছি। আমরা চেষ্টা করছি, এই সংগ্রামে জয়ী হওয়ার। দেশের মানুষকে মুক্ত করার। আমাদের গনতান্ত্রিক আন্দোলন সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, সরকারের সীমাহীন নির্যাতন ও গণগ্রেফতার সত্ত্বেও বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে বুক চিতিয়ে আন্দোলন করছে। জনগণের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এ আন্দোলন যেকোনো মূল্যে সফল হবে।
জেলা-উপজেলায় আন্দোলন যতোটা তীব্র, ততোটা নয় রাজধানী ঢাকাতে। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যতোটা সক্রিয়, ততোটা নয় মূল দল বিএনপি। ত্যাগী কর্মী-সমর্থকদের প্রশ্ন, রাজধানীজুড়ে এতো এতো থানা আর ওয়ার্ড কমিটি, কয়েক বছরের এতো প্রস্তুতি, সবই কি ব্যর্থ হলো চূড়ান্ত সময়ে?
এছাড়া, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে এক আসনেই ৯ জনকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছিলো বিএনপি। গড়ে কমপক্ষে ৩ জন হলেও ৩শ’ আসনে ৯শ’ প্রার্থী। তৃণমূলের প্রশ্ন, এক দফার আন্দোলনে কোথায় সেসব নেতারা? কেন হচ্ছে না দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন?
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আন্দোলন চলছে না, এমনটা না। এতো নিপীড়ন, এতো অত্যাচারের মধ্যেও আমাদের আন্দোলন কিন্তু বন্ধ হয়নি। আন্দোলন চলছে, চলবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে। আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
গ্রাম-গঞ্জে এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি নেই। দেখা যায় না স্বাভাবিক পদচারণা। এমনকি বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে ভয় পান অনেকেই। তারা বলছেন, মামলা-হামলা-মোকাদ্দমায় অনেক নেতা কর্মীরাই জেলে রয়েছেন। পরিস্থিতি এরকম হয়ে উঠেছে যে, এটা বলতে গেলেও সমস্যার সৃষ্টি হয়।
গ্রেফতার এড়াতে তৃণমূলের পদধারী প্রায় সব বিএনপি নেতা এলাকা ছেড়েছেন। যারা আছেন, কায়দা করে টিকে আছেন।
/এএম
Leave a reply