দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা রোধ করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৯১ জন বিশিষ্ট নাগরিক। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা।
বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
এতে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা সচেষ্ট রয়েছেন। কিন্তু একটি মহল নির্বাচন বানচাল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, এরই ধারবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে গণসমাবেশের নামে বিএনপি কর্মীরা একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। এমনকি প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও হাসপাতালে তারা তাণ্ডব চালায়। এছাড়া, গত ২৯ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিপুল সংখ্যক যানবাহন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এমনকি খাদ্যপণ্য বহনকারী যানবাহন, কাঁচামাল বহনকারী ট্রাক ও পিকআপ তাদের এই তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১২ ডিসেম্বর বিএনপি-জামায়াতের লোকজন গাজীপুরে রেললাইনের ফিসপ্লেট উপড়ে ফেললে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে একজন নিহত হওয়াসহ অসংখ্য যাত্রী আহত হন। সবশেষ ১৯ ডিসেম্বর সকালে আন্ত:নগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে সন্ত্রাসীচক্র অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় চার জন যাত্রী নিহত হয়। রাজনীতির নামে পরিচালিত দুবৃর্ত্তদের এ ধরনের নৃশংস বর্বরতা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না বলে তারা উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন প্রতিরোধ করে দেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করা। এই লক্ষ্যে দেশের একটি চিহ্নিত মহল সংবিধানের অপব্যাখ্যা দিয়ে নির্বাচনের সময়সূচি পরিবর্তন করে সাংবিধানিক অচলাবস্থা সৃষ্টির চেষ্টায় লিপ্ত।
বিবৃতিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশের সকল নাগরিককে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সফলভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ৯১ নাগরিকের মধ্যে অন্যতম হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা, দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, লে. জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর (অব.), লে. জেনারেল আবদুল ওয়াদুদ (অব.), লে. জেনারেল সাব্বির আহমেদ (অব.) প্রমুখ।
Leave a reply