চলমান রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে এখন নতুন আতঙ্ক ট্রেনে নাশকতা। গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে শিশুসহ মারা যায় চারজন।
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিভিন্ন যানবাহনে আগুনের ঘটনা ঘটলেও স্বস্তি ছিলো ট্রেন যাতায়াতে। তবে বাসের পাশাপাশি এখন রেলেও নজর পড়েছে দুর্বৃত্তদের।
নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে বাড়ছে রেল লাইন কেটে ফেলার পাশাপাশি ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনা। ফলে বাড়ছে যাত্রীদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা।
এরইমধ্যে, নাশকতার শঙ্কায় গভীর রাতে চলাচল করা ৮টি ট্রেন বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাশকতা রোধে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে জোরদার করা হয়েছে টহল। সেইসাথে, গভীর রাতে ট্রেন লাইনে পেট্রোলিং করছে নিরাপত্তারক্ষীরা।
১৯ তারিখের আগেও রেল লাইন কাটার ঘটনা ঘটে গাজীপুরে। গত ১৩ ডিসেম্বর এ ঘটনায় লাইনচ্যুত হয় ট্রেনের সাতটি বগি। নিহত হয় একজন।
এভাবে একের পর এক ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে যাত্রীদের মধ্যে। যমুনা টেলিভিশনের সাথে কথা বলেছেন মোহাম্মদ ফয়সাল নামে এক যাত্রী। আদরের দুই মেয়ে আর সঙ্গিনীকে নিয়ে যাচ্ছেন সিলেট। কিন্তু মনের ভেতর ঠিকই রয়েছে অজানা আতঙ্ক।
প্রথমেই তিনি বলেন বিবেককে জাগ্রত করার কথা। উদাহরণ টানেন নিজের পরিবারের কারও। বলেন, আমার পরিবারের কেউ এই রুট দিয়ে যাচ্ছে জানলে আমি তো ট্রেনে আগুন দিবো না। সবারই পরিবার রয়েছে। তাই যারা এসব কাজ করেন তাদের উচিৎ বিবেককে জাগিয়ে তোলা।
রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, তবুও যেতে হচ্ছে জানিয়ে আরেক যাত্রী বলেন, হুমকি তো আছেই। সামনে রেললাইন কাটা আছে নাকি আগুন দেবে সেটা তো কেউ বলতে পারবে না। তবে প্রয়োজন বলেই যেতে হচ্ছে।
এরইমধ্যে নাশকতা ও ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মোট ৮টি ট্রেন বন্ধ ও দুই ট্রেনের যাত্রা সীমিত করা হয়েছে। এগুলো গভীর রাতে চলাচল করতো।
এছাড়াও রেল লাইনে পেট্রোলিং করছে নিরাপত্তারক্ষীরা, জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগ রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান। বলেন, নাশকতা বন্ধে ট্রেনে ওঠার সময় করা হচ্ছে ভিডিও। সেই সাথে তুলে রাখা হচ্ছে ছবিও।
এদিকে, ঢাকা বিভাগে ৫৫টি সহ সারাদেশে প্রায় ২০০ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করেছে রেল পুলিশ। এসব জায়গায় জোরদার করা হয়েছে টহল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ে পুলিশের এসপি (ঢাকা জেলা) আনোয়ার হোসেন বলেন, গভীর রাতে অর্থাৎ রাত ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত করা হবে মনিটরিং। বিশ্লেষণে কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তারা সম্ভাব্য যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা রয়েছে সেসব জায়গায় ২৪ ঘণ্টা থাকবে নিরাপত্তা বাহিনী। দেবে টহল।
ট্রেনে নাশকতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ যাত্রীদেরও সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
/এমএইচ
Leave a reply