আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ার জোহর প্রদেশে ১৭১ জন বাংলাদেশি বৈধ অভিবাসী কর্মীকে আটক করায় নিন্দা জানিয়েছে দেশটির বৃত্তম ও প্রভাবশালী শ্রমিক সংগঠন মালয়েশিয়ান ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস (এমটিইউসি)।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে মহাসচিব কামারুল বাহারিন মনসুর বলেন, যেসব শ্রমিকরা এজেন্টদের দ্বারা চাকরি না পেয়ে প্রতারিত হয়েছেন তাদের শাস্তির পরিবর্তে সহায়তা করা উচিত। এমটিইউসি চাকরি জালিয়াতির শিকার হওয়া বিদেশী কর্মীদের আটকে পুলিশ এবং ইমিগ্রেশনের এমন পদক্ষেপে হতবাক।
এসব বিদেশী শ্রমিক বৈধভাবে প্রবেশ করেছে এমন মন্তব্য করে বিবৃতিতে আরও বলা হয় তারা প্রতারণার শিকার হয়েছে। পরে নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ফলে অবৈধ অভিবাসী হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
এমটিইউসি ওই বিবৃতিতে মালয়েশিয়ান সরকারকে এ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার আহ্বান জানায়। একইসাথে যারা চাকরির সুযোগের প্রতিশ্রুতি নিয়ে মালয়েশিয়ায় আসে কিন্তু কর্মসংস্থান ছাড়াই সবকিছু শেষ হয়ে যায়, সে ধরনের বিদেশি কর্মীদের চিহ্নিত করার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
মনসুর বলেন, এমটিইউসি এমন কিছু সংস্থা ও ব্যাক্তির মাধ্যমে এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটছে বলে রিপোর্ট পেয়েছে যারা মালয়েশিয়ার বাইরে থেকে এবং সরাসরি বিদেশি কর্মীদের নিয়ে কাজ করে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, যদি এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান না করা হয় তাহলে পরের বছর মানব পাচার প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ার তৃতীয় স্তরে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
এমটিইউসি সরকারকে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বিদেশি কর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছে। সতর্ক করেছে যে, এই ধরনের শিথিল পদক্ষেপের ফলে শ্রম আইন লঙ্ঘন হতে পারে। বলেন, কোম্পানিগুলি বিদেশি শ্রম সরবরাহ শিল্পের সুবিধা নেয়, যা সোনার খনি হিসাবে দেখা হয়। এই শিল্পে দুর্নীতি, ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, গুন্ডাবাদ এবং কার্টেলসহ বিভিন্ন নেতিবাচক চর্চা রয়েছে।
বিদেশি কর্মীদের সমস্যা উল্লেখ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্লাভস এবং পাম তেল প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে উল্লেখ করে মানসুর আরও বলেন, বিদেশি কর্মীদের জন্য সুরক্ষা এবং কল্যাণমূলক পদক্ষেপগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। যাতে দেশটিকে সুনাম ক্ষুন্ন হওয়া ও অর্থনৈতিক কুপ্রভাব থেকে রক্ষা করা যায়।
বিবৃতিতে এমটিইউসি মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনকে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সাথে জড়িত পুরো নেটওয়ার্কের একটি ব্যাপক তদন্ত শুরু করার জন্য অনুরোধ করে।
জোহর পুলিশের বরাতে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর ১৭১ জন বাংলাদেশী পুরুষের দল তাদের এজেন্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করার জন্য বায়ু দামাই থানার দিকে যাচ্ছিল। কারণ তারা দাবি করেছিল যে, তারা তিন থেকে ছয় মাস পরেও নিয়োগ পায়নি। সেখানেই তাদের আটক করে পুলিশ। আটকের পর তাদের অভিবাসন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
/এমএইচ
Leave a reply