বুকে পাথর বেঁধে ফিরেছিলাম: প্রধানমন্ত্রী

|

বুকে পাথর বেঁধেই ১৯৮১ সালে দেশে ফিরেছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বললেন, আমার অবর্তমানেই আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয় ’৮১ সালে। আমার ছেলে জয়ের বয়স তখন ১০, পুতুল ৮ বছরের। আমি তাদের মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে বাংলার মাঠিতে ফিরে আসি। আমি বুকে পাথর বেঁধে ফিরেছিলাম।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় দেয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে যেদিন আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি, সেদিন আমার মন-চোখ খুঁজে বেড়াচ্ছিল, আমার কামাল-জামাল-রাসেলকে। আমি তাদেরকে পাইনি। বাবা-মা কাউকে পাইনি। কিন্তু আমি পেয়েছিলাম, হাজার হাজার মানুষ। যারা সেদিন স্বৈরাচার ও খুনী জিয়াউর রহমানের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিল। সেদিন আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, আজকে থেকে বাংলাদেশের মানুষই আমার পরিবার। এরাই আমার আপনজন। আমি আপনাদের মাঝেই পেতে চাই বাবা-মায়ের স্নেহ। আমি সত্যিই সে ভালোবাসা পেয়েছি। সেটাই আমার একমাত্র শক্তি। আমার সবচেয়ে বড় শক্তি কী? আপনারা… টুঙ্গিপাড়াবাসীই। এখানে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছে। এরপরও আপনারা আমাকে স্নেহ, ভালোবাসা, সমর্থন দিয়ে আগলে রেখেছেন। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই বাংলাদেশকে নিয়ে আমার বাবার স্বপ্ন ছিল, দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলবে। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবে। তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। এ দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে। আমি এজন্য প্রাণপণে চেষ্টা করে গেছি। নিজের দিকে থাকাইনি।

টুঙ্গিপাড়ার পর শেখ হাসিনা আজ বক্তৃতা দেবেন কোটালীপাড়ায়। এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-৩ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী আসন। তাই নিজের জন্য ভোট চাইতে এলাকায় ছুটে যান শেখ হাসিনা। সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানাও। তারা সকালে সমাবেশস্থলে পৌঁছানোর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয় মাঠ। জাতীয় পতাকা উড়িয়ে দুই বোনকে স্বাগত জানায় মানুষ। আর শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা মঞ্চে উঠে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে তাদের অভিবাদন জানান।

ভোটারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন শুধুমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারে। বিএনপি বা জামায়াতের সেই যোগ্যতা নেই। অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করাই বিএনপির রাজনীতি। তাদের জনসমর্থন নেই বলেই নির্বাচনে আসেনি। দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোট বানচালের জন্য নানা ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।

সরকারপ্রধান এ সময় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন, ভুমিহীন থাকবে না। ৮ লাখ ৪১ হাজার পরিবারকে ঘর দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করাই সরকারের লক্ষ্য।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply