রিমন রহমান:
বৈশ্বিক নানা কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক। এই সংকটের সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে গ্যাস স্বল্পতা। গ্যাস সংকটে পণ্য উৎপাদনের ডেডলাইন পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে কারখানাগুলো।
এদিকে, নিট গার্মেন্টসের বেশিরভাগই নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত। গ্যাস সংকটের কারণে ওই এলাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন।
এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, যখন গ্যাসের মূল বাড়ানো হলো তখন কিন্তু বলা হয়েছে নিরবিচ্ছিন্নভাবে গ্যাস দেয়া হবে। মূল্য বৃদ্ধি হলো, কিন্তু গ্যাসের সমস্যার সমাধান হলো না। এখন আগের চেয়ে আরও খারাপ পরিস্থিতি। আগে তো দিনে পাওয়া যেতো না, রাতে পাওয়া যেতো; এখন রাতেও পাওয়া যায় না। এভাবে পুরো নারায়ণগঞ্জকে উপেক্ষা করা আমাদের জন্য পীড়াদায়ক।
গাজীপুরেও প্রায় এক হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে গ্যাস স্বল্পতায়। ৫২৮টি ক্যাপটিভ, ২৫৮টি বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে সেখানে। তবে চাহিদার অর্ধেকও গ্যাস মিলছে না। সিরামিক শিল্প, ইস্পাতসহ নানা শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাসের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না হলে সঙ্কট বাড়বে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, গ্যাসের নতুন যে রেট, তা দিয়েও ব্যবসায়ীরা ভুগতেছে। নতুন সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, সরকার ব্যবসাবান্ধব হবে। ব্যবসাবান্ধব সরকার ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধান করবে।
বলা হচ্ছে বড় শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে গ্যাসের দরকার। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক (সিপিডি) খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, সরকারের উচিত হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসএমই শিল্পের জন্য গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা। নয়তো অব্যাহতভাবে এভাবে চলতে থাকলে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এলএনজি আমদানির মাধ্যমে নয়, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সংকট সুরাহা করতে হবে বলেও মত দিলেন এই গবেষক। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এখন ১৯টি কূপ খনন চলছে। এগুলোর কাজ বেগবান করা দরকার বলে আমরা মনে করি। আর পুরনো যেসব কূপ রয়েছে, তার ভেতরে গ্যাস পকেট রয়েছে, সেগুলো পাওয়া যেতে পারে। অফশোরে যে কূপ, গ্যাস ফিল্ড রয়েছে, সেগুলোতে কার্যক্রম শুরু করা।
এদিকে, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এবং কর্মসংস্থান ঠিক রাখতে শিল্প উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মত সং।
/এমএন
Leave a reply