আহমেদ রেজা:
ইসমাইল আলী, ২০ বছর ছিলেন প্রবাসে। নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে হাড়ভাঙা খাটুনিতে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ফিরেছেন ঢাকায়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইলেও নেই পরিবার পরিজন। তাই জীবনের শেষ সময়টা কাটাতে চান বৃদ্ধাশ্রমেই। মালয়েশিয়া থেকে ফেরার পর এখন আশকোনার ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে হয়েছে ঠাঁই তার।
গতবছর রোজায় স্ট্রোক করে ইসমাইল আলীর শরীরের এক অংশ প্যারালাইজড হয়ে যায়। তারপর থেকে অসহায় জীবনের শুরু তার। চিকিৎসা খরচ মেটাতে না পেরে ফিরে আসেন দেশে।
তবে, তার যে আশ্রয় নেয়ার কেউ নেই। যখন প্রবাসে আয় করেছেন, তখন একটা সময় পর্যন্ত বাবা-মাকেও পাঠিয়েছেন অর্থ। কিন্তু সেই আশ্রয়ও হারিয়েছেন বাবা-মা মারা যাওয়ায়।
ইসমাইল আলী বলছিলেন, ওখানে শুয়ে-বসে খেয়েছি। যে বাসায় ছিলাম, সেটার বাড়িওয়ালা বলে, সম্ভব হলে দেশে চলে যাও। টিকিট করে দেয় সে।
নিকট আত্মীয় না থাকায় চিকিৎসা খরচের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। একই সাথে তার দেশে থাকার কোনো আশ্রয় না থাকার কারণে বৃদ্ধাশ্রমেই থাকতে চান ইসমাইল আলী। বললেন, বৃদ্ধাশ্রমে থাকলে তারা একটু সেবা-যত্ন করবে। তাতে আমি একটু সুস্থ হয়ে উঠবো। তখন হয়তো আমি কাজ করতে পারবো।
এদিকে, ইসমাইল আলীর ঠাঁই হওয়া ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারের কর্মকর্তারা জানান, পাসপোর্টের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী ইসমাইল আলীর বাড়ি ও স্বজনদের খোঁজা হচ্ছে। পাওয়া না গেলে তার চিকিৎসার পাশাপাশি বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থাও করা হবে।
ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল আমিন নয়ন বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের প্রতিনিধিরা তার আত্মীয়-স্বজনকে খোঁজ করছে। তার কোনো পরিবার আছে কি না কিংবা অভিমান থেকে কেউ নাই বলছে নাকি তা বের করার চেষ্টা চলছে। যদি না পাওয়া যায়, তাহলে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কোনো একটি আশ্রমে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
গত ৪ বছরে প্রবাস ফেরত এমন মানসিক ও শারিরীকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ১২৮ জনকে সহায়তা করেছে ব্র্যাক।
/এমএন
Leave a reply