মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে আরও কোণঠাসা করতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর চলছে জোর প্রশিক্ষণ। সেনা শাসন বিরোধী এ লড়াইয়ে দলে দলে যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সীমান্ত অঞ্চলের জঙ্গলে চলছে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ। শেখানো হচ্ছে রণকৌশল। বিভিন্ন অস্ত্র তৈরির পাশাপাশি দেখানো হচ্ছে গোলা-বারুদের ব্যবহার।
সদস্যদের দেয়া হচ্ছে অস্ত্র তৈরি ও চালনার প্রশিক্ষণ। স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে দেখানো হচ্ছে দূর থেকে শত্রুকে ঘায়েল করার কৌশলও। দক্ষতা বৃদ্ধির এই আয়োজনে হালকা অস্ত্রের সাথে আছে ভারি সমরাস্ত্র। সাঁজোয়া যান ও ট্যাঙ্কের মতো বড় বড় লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে ঝালিয়ে নেয়া হচ্ছে অ্যান্টি ম্যাটেরিয়াল রাইফেলও। নিজস্ব পদ্ধতি আর ফর্মূলায় তৈরি হচ্ছে মর্টার, রকেট লঞ্চারের মতো অস্ত্রও।
প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ছাত্র। আছেন নার্স, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ নানা পেশার মানুষ; যাদের কেউই এর আগে কখনোই সমরাস্ত্র দেখেননি। কিন্তু, অপেশাদার এই অস্ত্রধারীরাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হয়ে উঠছেন দুঃসাহসী। যুদ্ধের ময়দানে কোণঠাসা করছেন অভিজ্ঞ সেনাদের।
থেট অং নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, আড়াই বছর আগে হাতে বানানো সিঙ্গেল অ্যাকশন গান আর মাইন নিয়ে শুরু হয়েছিল জান্তাবিরোধী অভিযান। সত্যি বলতে এতো অল্প সময়ে অভ্যুত্থানবিরোধী অভিযানের এমন বিকাশ হবে-তা কেউ ভাবেনি।
এদিকে, হামলার জন্য বেছে নেয়া হচ্ছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো। হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতিতে চালানো হচ্ছে গেরিলা হামলা। লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনী এবং সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি ও নিরাপত্তা চৌকি। পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জিম্মি করা হচ্ছে।
গেল অক্টোবরে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালাইয়েন্স- মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (MNDAA) এর নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যৌথভাবে সশস্ত্র যুদ্ধ ঘোষণা করে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। অপারেশন-১০২৭ শুরুর পর থেকেই কাচিন রাজ্যের পাশাপাশি শান, চিন, কায়িন, রাখাইনসহ ৮টি প্রদেশে বিদ্রোহীদের তুমুল প্রতিরোধের মুখে পড়ছে জান্তা বাহিনী। দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘ইরাবতী’র তথ্য অনুসারে, গেল কয়েক মাসে ছয় হাজারের বেশি সেনা আত্মসমর্পণ করেছে।
/এনকে
Leave a reply