রুটের ‘বাজবল’ খেলা ভুলে যাওয়া উচিত: ভন

|

ছবি: সংগৃহীত

টেস্ট ক্রিকেটে নিজেকে কিংবদন্তির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক জো রুট। লাল বলের ক্রিকেটে ইংলিশদের হয়ে এখন পর্যন্ত করেছেন প্রায় সাড়ে ১১ হাজার রান। টেস্টে এতো রান করার পর রুটের মতো ব্যাটারের ‘বাজবল’ খেলার দরকার নেই বলে মনে করেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন। তার মতে, বাজবল ক্রিকেট খেলতে গিয়েই ঝামেলা পাকাচ্ছেন রুট।

ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের কোচ হওয়ার পর থেকেই টেস্টে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে শুরু করে ইংলিশরা। ম্যাককালামের ডাকনাম ‘বাজ’ এর সাথে মিলিয়ে এই ধাঁচের ক্রিকেটকে বাজবল বলে ডাকতে শুরু করে দেন সকলে। অল্প সময়েই বাজবল ক্রিকেট দিয়ে টেস্টে দারুণ উন্নতি করে ইংল্যান্ড। যার ফলে জনপ্রিয়তা বাড়ে বাজবলের।

চলমান সিরিজের আগে ভারতে রুটের রেকর্ড ছিল দারুণ। ১০ ম্যাচের ২০ ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি ও পাঁচ ফিফটিতে করেছিলেন ৯৫২ রান। সর্বোচ্চ ২১৮, গড় ছিল ৫০.১০। চার ইনিংসের ব্যর্থতায় গড় নেমে এসেছে ৪৩.৬৫-এ। অবশ্য এই সময়ে মাত্র পঞ্চম সফরকারী ব্যাটার হিসেবে ছুঁতে পেরেছেন হাজার রানের সীমানা। তবে এই প্রাপ্তি একদমই ম্লান হয়ে গেছে টানা চার ইনিংসের ব্যর্থতায়। 

২৯ রানের ইনিংস দিয়ে শুরু করেছিলেন সফর, পরের ইনিংসে করেন কেবল ২ রান। পরের টেস্টে ৫ রান করার পর পাগলাটে ব্যাটিংয়ে ফেরেন দ্রুত। ক্রিজে গিয়েই খেলেন রিভার্স সুইপ। পাল্টা আক্রমণে ৯ বলে করে ফেলেন ১৬। পরের বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে এগিয়ে এসে স্লগ খেলেন তিনি। ব্যাটের কানায় লেগে ধরা পড়েন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। ম্যাচটি ১০৬ রানে হারে ইংল্যান্ড।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফে এক কলামে ২০০৫ সালের অ্যাশেজজয়ী অধিনায়ক লিখেছেন, প্রথম বল থেকেই তারা পঞ্চম গিয়ারে শুরু করে। তাদের কেউ কেউ এভাবে খেললে আমার কোনোই আপত্তি নেই। কারণ, তারা এসবে ভালো। তবে জো রুটের এসব ভুলে যাওয়া উচিত। জো রুটের মতো করে খেলেই সে ১০ হাজার টেস্ট রান করেছে। তার ‘বাজবলার’ হওয়ার দরকার নেই।

রুটকে এই বিষয় থেকে বের করতে টিম ম্যানেজমেন্টেরও এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন ভন। একই সঙ্গে ডানহাতি এই ব্যাটারকে স্পিনের বিপক্ষে দেশটির ইতিহাসের সেরা একজন ব্যাটার হিসেবে আখ্যা দিয়ে সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ম্যানেজমেন্টের কেউ রুটের কাঁধে হাত রেখে বলবে ‘দয়া করে নিজের খেলাটাই খেলো’। আমার মনে হয় এটা পানির মতো পরিষ্কার যে, সে বাজবলে বেশি মাথা ঘামিয়েছে। এই রোমাঞ্চ আর বিনোদনের যে তত্ত্ব, বিশেষ করে স্পিনের বিপক্ষে (রুটের নিজের মতো খেলা গুরুত্বপূর্ণ)। গ্রাহাম গুচের পর রুটই স্পিনের বিপক্ষে ইংল্যান্ডে সেরা ব্যাটার।

দ্বিতীয় ইনিংসে রুটকে মোটেও তার মতো মনে হয়নি ভনের। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে যেভাবে খেলেছে, এটা তো রুট নয়। এভাবে উইকেট ছুড়ে দিলে ইংল্যান্ড ভারতে জিতবে না। আমি বুঝেছি, কিছু একটা হয়েছে। যখন দুই ইনিংসেই রিভার্স সুইপে প্রথম রান করেছে। সে এভাবে খেলে না। সে সময় নেয়, এরপর ঝুঁকি নেয়। জয়ের সেই শক্ত ভিতটা হতে হবে, যাকে ঘিরে বাকিরা খ্যাপাটে আক্রমণ চালাবে।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে দুই দলের সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। রাজকোটে রুটের কাছ থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং প্রত্যাশা করবেন ভন।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply