সকল গীতিকারই ‘কবি’ নয়: লতিফুল ইসলাম শিবলী

|

লতিফুল ইসলাম শিবলী এমন একটি নাম, যার বিচরণ শিল্পের প্রায় প্রতিটি পাতায়। ৯০ দশকের রক মিউজিকের প্রধান গীতিকবিদের একজন তিনি। দশকজুড়ে তিন শতাধিক কবিতা লিখেছেন। সেগুলো গান হয়ে ডানা মেলেছে জেমস, আইয়ুব বাচ্চুদের কণ্ঠে। লিখেছেন একাধিক নাটক। নিজের লেখা নাটক ‘রাজকুমারী’তে মির্জা গালিবের চরিত্রে অভিনয় করেও জনপ্রিয়তার দেখা পেয়েছেন। তবে এখন তিনি পুরোদস্তুর ঔপন্যাসিক। উপন্যাসে এঁকে চলেছেন নিজের জীবন বা রাজনৈতিক দর্শনের ছাপ। এখন তিনি সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। তবে নব্বই দশকের মানুষের মনে শিবলীর যে প্রতিচ্ছবি বিরাজমান, এখনকার পাঠকের কাছে সেটা হয়তো ভিন্ন রুপে ধরা দেয়।

লেখালেখি, কবিতাপ্রেম, উত্তাল সময়ের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গ আড্ডায় উঠে আসে। বইমেলা প্রাঙ্গণে ‘ইচ্ছে হলে ছুঁতে পারি তোমার অভিমান’-এর লেখকের সঙ্গে কথা বলেছেন আল মাহফুজ

যমুনা অনলাইন: এ পর্যন্ত আপনার ক’টি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: এটা (ইমাম) হচ্ছে আমার অষ্টম উপন্যাস। 

যমুনা অনলাইন: এবার সাড়া পাচ্ছেন কেমন?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: আলহামদুলিল্লাহ, খুব ভালো। 

যমুনা অনলাইন: আপনার লেখা উপন্যাসগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দিক থেকে কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: প্রতিটাই এগিয়ে থাকা উপন্যাস। আমি এগিয়ে থাকা ছাড়া উপন্যাসই লিখি না। গল্প লেখার জন্য গল্প লিখি না। আমার একটা গল্প লেখার পেছনে ২০ বছরের প্রস্তুতি আছে। এখন যা কিছু লিখছি, ওই প্রস্তুতি থেকেই। আগামী ২০ বছর পর কী লিখবো, কোনটার পর কোনটা যাবে, সব পরিকল্পনা করা আছে। সুতরাং একদম ওভার নাইট কোনোকিছুই হয়নি। ‘একটা গল্প লিখলাম, একুশে বইমেলায় একটা বই আসবে’, এরকম কিছু না। অল আর প্রিটি মাচ প্ল্যানড।

যমুনা অনলাইন: বাংলাদেশ যখন লতিফুল ইসলাম শিবলীকে চিনলো একজন বড় গীতিকবি হিসেবে, তখন কি তার মনে এই ভাবনাটা ছিল, যে একদিন উপন্যাস লিখব? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: আমি বেসিক্যালি পোয়েট। আমি আসলে গীতিকবি, গীতিকার না। আমি গানের জন্য গান লিখিনি, কবিতা লিখেছি। ‘প্যারিসের চিঠি’ প্রথমে কবিতা, জেমস যখন ওইটা গাইলেন, ওইটার নাম হয়ে গেল ‘প্রিয় আকাশী’। ‘কষ্ট’ হচ্ছে একটা কবিতা, পরে আইয়ুব বাচ্চু ওইটাকে গানে পরিণত করলেন। তো আমার বেশিরভাগ গানই বস্তুত গীতি কবিতা। এখনও নিজেকে কবি বলতে ভালোবাসি আমি। এই পরিচয় দিতেই পছন্দ করি। কী যেন ছিল প্রশ্নটা?

যমুনা অনলাইন: ওই সময়ে আপনি ভেবেছিলেন, ২০ বছর পর উপন্যাস লিখবেন?  

লতিফুল ইসলাম শিবলী: আমি যে লেখক হব, ছোটবেলা থেকে এটা আমার পরিকল্পনা ছিল। আলহামদুলিল্লাহ, আমি আমার প্যাশনের মধ্যেই আছি। আমার প্যাশন বা প্রফেশন সব এখন এটাই। সুতরাং আমি কীভাবে বিখ্যাত হব বা বিখ্যাত হব না, ওইটা ইস্যু না। আমি আসলে লিখব, এটা আসলে অনেক আগের পরিকল্পনা ছিল। এখন পর্যন্ত এরমধ্যেই আছি আর কি। আমার কথা হলো, মানুষ যে কোনো কিছুতে লেগে থাকলে ফুটা-ফাটা দিয়ে হলেও আল্টিমেট সাকসেস আসবে তার। লেগে থাকতে হয়। এতো বছর লেগে আছি, তাই হয়তো এখন মানুষ একটু আধটু চেনে-টেনে। পড়ে-টড়ে। 

যমুনা অনলাইন: প্রথমদিকে তো আপনি কবিতা লিখতেন, লিরিক লিখতেন। উপন্যাস লেখার ভাবনা কবে আসে? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: আমি আসলে অনেক আগে থেকেই গল্প লিখতে চেয়েছি। একসময় নাটক লিখতাম। প্রচুর টিভি নাটক লিখেছি। বিটিভির যুগে একটা বিখ্যাত নাটক ছিল– ‘রাজকুমারী’। যেটাতে আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া একটা থিম সং ছিল। তারও আগে আমার লেখা নাটক ছিল ‘তোমার চোখে দেখি’। ওই বছরের সেরা নাটক ছিল ওইটা। আমি আর্লি নাইন্টিজের কথা বলছি। আমার ওই বয়সে নাটকটা রেটিংয়ে এসেছিল, সম্ভবত পঞ্চমে। আমার ওপরে ছিল হুমায়ূন আহমেদ, মাঝখানে আমি। বলছি সেই সময়ের কথা, যখন আহমেদ ইউসুফ সাবের, মইনুল আহসান সাবের, জাফর ইকবাল, আব্দুল্লাহ আল মামুনরা নাটক লিখতেন। তখন আমি ছিলাম ২৫ বছরের তরুণ।

‘রাজকুমারী’ নাটকে শিবলী অভিনয় করেছিলেন শমী কায়সারের সঙ্গে।

যমুনা অনলাইন: ওই সময়ে সম্ভবত নওয়াজেস আলী খানও ছিলেন।

লতিফুল ইসলাম শিবলী: হ্যাঁ। আমাকে তিনি ডেকে পাঠিয়েছিলেন। আমাকে দেখে অবাক হয়ে বলেছিলেন– “আরে, এই পিচ্চি পোলা নাটক লিখেছে!” যাহোক, ওই সময়ে গান লিখছি, কবিতা লিখছি। ‘৯৫-এ কবিতার বই বের হয় ‘ইচ্ছে হলে ছুঁতে পারি তোমার অভিমান’। ওই সময়ে কবিতার বইটা ভালো চলেছিল। তখন সময়টা কবিদের যুগ। আরলি নাইন্টিজ হলো কবিদের যুগ। তখন বইমেলার সেলিব্রিটি ছিলো কবি। এখন যেমন কথাসাহিত্যিকরা। এখন এই সময়ের কবিতাকে বা কবিদেরকে মানুষ ওইভাবে চেনেও না, অতো পাত্তাও দেয় না। এখন পাত্তা পায় মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সাদাত হোসাইনরা।

যমুনা অনলাইন: আপনাকেও তো এখন ‘পাত্তা’ দেয়া হয়। 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: আমার নিজের কথা তো আর বলতে পারি না। হাহাহা…। লেখার প্রস্তুতিটা এভাবেই হচ্ছে আর কি। 

যমুনা অনলাইন: আচ্ছা, আপনি বলছিলেন– আমি একজন গীতিকবি, গীতিকার না। অনেক পাঠক, কিছু ক্ষেত্রে লেখকও এই দুইটার মধ্যকার পার্থক্য ধরতে পারে না। ‘গীতিকবি’ ও ‘গীতিকার’-এর মধ্যে ফারাকটা আদতে কী? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: ফারাক হচ্ছে ‘সকল কবিই কবি, কিন্তু সকল গীতিকার কবি নয়’। এই তো ফারাক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবি, কাজী নজরুল ইসলাম কবি। তাদের কবিতা হচ্ছে গীতিকবিতা। কিন্তু নজরুল ইসলাম বাবু কিংবা গাজী মাজহারুল আনোয়াররা কবি না। তারা হচ্ছেন গীতিকার। তারা গানের জন্য গান লিখেছেন।

যমুনা অনলাইন: তারা সিনেমার গান লিখতেন, এজন্য এমনটা বলছেন? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: না না। যেকোনো গানই লিখুক না কেন। যখন কবিতা থেকে গান করা হয় তখন স্ট্রাকচারটা একরকম। আর যখন গানের জন্য গান লিখবেন, তখন স্ট্রাকচারটা দাঁড়ায় আরেক রকম। আমি আমাকে ‘গীতিকবি’ বলি। কারণ, আমার কবিতাগুলোকে গান করা হয়েছে। আমি টিপিকাল গানের স্ট্রাকচারে গান লিখিনি। 

যমুনা অনলাইন: আপনি যখন কবিতাগুলো লিখলেন এবং এগুলোকে যখন জেমস-আইয়ুব বাচ্চুরা গান বানালেন, তখন কি এই ধারাটা বাংলাদেশে বিরাজ ছিল? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: বাচ্চু ভাই, জেমস ভাইরা যে ঘরানার গান করেছেন, সেটা ছিল রক মিউজিক। রক মিউজিকের কোনো গ্রামার নেই। একটা পেপার এনে দেন, গান বানিয়ে ফেলবে। পেপার কাটিং কিংবা প্রবন্ধ থেকে গিটার দিয়ে গান বানিয়ে ফেলা সম্ভব। সুতরাং ওদের সাথে আমার এভাবে ম্যাচ করেছে। তাঁরা নতুন মিউজিক নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন, আমরাও তখন চাচ্ছি পিংক ফ্লয়েডের মতো গান লিখতে। আই ওয়াজ প্রিটি মাচ ইনফ্লুয়েন্সড বাই পিংক ফ্লয়েড। ষাটের দশকের পিংক ফ্লয়েড দ্বারা আমি বেশ প্রভাবিত ছিলাম। পিঙ্ক ফ্লয়েডের গানের মধ্যে এরকম পুতুপুতু প্রেম ছিল না। ওরা খুব দেয়াল ভাঙ্গা গান, সিস্টেম ভাঙ্গা গান লিখতো।

যমুনা অনলাইন: এজন্যই আপনার একক অ্যালবামের নাম ছিল ‘নিয়ম ভাঙ্গার নিয়ম’?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: নট রিয়ালি। মানে আমি তাদের দ্বারা ইনফ্লুয়েন্সড হই যে, গান এরকম হতে পারে। প্রথম লিখলাম ‘জেল থেকে বলছি’। নব্বইয়ের শুরুর দিকে যখন এই লিরিক আমি লিখি, তখন কেউ চিন্তাও করতে পারেনি গান এমন হতে পারে। আমি লিখলাম ‘পেশাদার খুনি’, ‘বন্দী জেগে আছে’। লিখতে থাকলাম ‘বাঙ্কারে ফুলসজ্জা’, ‘প্যারিসের চিঠি’, ‘মান্নান মিয়ার তিতাস মলম’। এগুলো কি গানের মত মনে হয়? 

যমুনা অনলাইন: একদা মনে হতো না। এখন তো শুনতে শুনতে ঠিক দুপুরের রোদের মতো মনে হয়।

লতিফুল ইসলাম শিবলী: তখনকার সময়ে কেউ চিন্তাই করতে পারেনি, এইসব শব্দ দিয়ে গান হতে পারে। ‘বিবাগী’ও এরকম একটা গান। আমি যদি আমার ৩০০ গানের লিস্ট দেই, আপনি বলবেন– এগুলো তো আনকমন লিরিক! মানে গানের মতো মনে হবে না। 

যমুনা অনলাইন: নব্বইয়ের দশকে বা এই শতকের শুন্য দশকে লতিফুল ইসলাম শিবলীকে গানে যেভাবে পাওয়া যেতো, এখন সেভাবে কেন পাওয়া যাচ্ছে না?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: এখন উপন্যাসে পাওয়া যাচ্ছে আমাকে। আমি তো সময়ের পারপাস সার্ভ করেছি। তখন গানে সময় দেয়ার দরকার ছিল, সার্ভিস দিয়েছি। এখন আমার সার্ভিস হচ্ছে কথা সাহিত্য। তাই কথাসাহিত্যে সার্ভিসটা দিচ্ছি।

যমুনা অনলাইন: এখন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি বা গানের কেউ যদি আপনার কাছে নব্বইয়ের সার্ভিসটা চায়, তাহলে?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: এখনকার ইয়াং যারা আছে, তাদের সঙ্গে আমার ঠিক বোঝাপড়াটা হয় না। ওদের ল্যাঙ্গুয়েজ আর আমার ল্যাঙ্গুয়েজের মধ্যে মনে হয় ফারাক অনেক। একারণে আমি ওইদিকে আর যেতেও চাই না। অনেকেই গান লিখছে। বেশিরভাগই খারাপ লিখছে, তবে কেউ কেউ ভালো লিখছে। দুই-একটা ভালো গান হচ্ছে আর কি। আগে যেমন অনেক ভালো গান হতো, এখন কম ভালো গান হয়। এখনকার ল্যাঙ্গুয়েজে ওরা লিখছে। ওইটার সাথে আমি হয়তো অভ্যস্ত না। আমি এখনকার ভাষার সাথে অর্থাৎ কথাসাহিত্যের সাথে অভ্যস্ত। যার ফলে আমার অনেক পাঠক তৈরি হয়েছে।

যমুনা অনলাইন: আমরা জানি, লেখালেখির কনটেক্সটে দুরকম ‘স্কুল অব থট’ রয়েছে। একটা মনে করে, গল্প বা গানের প্রেক্ষাপট যেখানে, সেই গন্তব্যে গিয়ে লিখলে লেখার সুবিধে হয়। আরেক ধরনের মত রয়েছে যে, কবি বা লেখক সেখানে না গিয়েও লিখতে পারেন। আপনার কী মতামত?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: দেখুন, এখন আমরা খুব বাজে একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এখনকার যারা গান করেন, তাদের গানের মধ্যে কি এই সময় উঠে আসছে? কেউ ফ্যাসিবাদ বিরোধী কোনো গান লিখছে? গানের মধ্যে তো এসব উঠে আসার কথা। হ্যাঁ, বিশ কোটি মানুষের মধ্যে একটা সায়ান আছে, যে টুকটাক ছিটেফোঁটা কাজ করছে। এটলিস্ট ৫০ জন গায়ক উঠে আসার কথা ছিল।

যমুনা অনলাইন: তখন তো শ্রোতারাও বলতে পারে, লতিফুল ইসলাম শিবলীর গানেও উঠে আসুক সময়ের কথা?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: না, আমার সময়ে এগুলো অনেক করেছি। আমার মনে হয়, এখনকার যারা আছে, তাদের দায়িত্ব এটা। আমি আসলে এখন এগুলোর (নিজের উপন্যাসের দিকে ইঙ্গিত করে) মধ্য দিয়ে লিখছি। 

যমুনা অনলাইন: আচ্ছা। দুইটা গানের পেছনের গল্প জানতে চাই। ‘জেল থেকে বলছি’ গানের প্রেক্ষাপট কী?

লতিফুল ইসলাম শিবলী: উত্তাল সময়। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ে আমি নাটোর শহরে একদম ফ্রন্টফাইটার ছিলাম। ওই সময়ের প্রেক্ষাপটে এটা লেখা। প্রথমে গানটি লিখেছিলাম দেয়ালের ওপরে। তখন একটা ইলেকশন হচ্ছিল স্টুডেন্ট সংসদের। তো আগের রাতে সবাইকে ধরে নিয়ে গেছে। তখন তাদের নাম দিয়ে আমি একটা লিফলেট তৈরি করেছিলাম। দেয়ালের মধ্যে লিখেছিলাম– অমুক অমুক, আমরা জেল থেকে বলছি। অমুক সংসদ পরিষদকে তোমরা ভোট দিও। এটা দিয়ে একটা লিফলেট তৈরি করেছিলাম, দেয়ালে দেয়ালে লিখেছিলাম।

যমুনা অনলাইন: তখন তো এটাকে ‘চিকা মারা’ বলতো।

লতিফুল ইসলাম শিবলী: হ্যাঁ। নাটোরের ভাষায় এটাকে বলে ‘ওয়ালিং’। ঢাকার ভাষায় এটাকে বলে ‘চিকা মারা’। পরে আমি যখন ঢাকায় আসলাম, ওই যে মাথার মধ্যে পোকা ছিল, আমি তখন এটাকে অন্য ফর্মে নিয়ে গেলাম আর কি। শিরোনামটা ছিল ওইটাই– ‘জেল থেকে বলছি’। 

যমুনা অনলাইন: আরেকটা গানের অন্তরালের কথা জানতে চাই। ‘ছুটি পেলে মাগো তোমায় দেখতে যাবো’, এরকম একটা গান আছে আপনার.. 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: এটা আমার গাওয়া গান। এটার প্রেক্ষাপট হচ্ছে আমরা যারা মফস্বল থেকে ঢাকায় এসে প্রতিনিয়ত অভিনয় করি টিকে থাকার জন্য। আমরা মফস্বলের গায়ের কাদামাটি আড়াল করে রাখি। স্ট্রাগলগুলোকে লুকিয়ে রেখে আমরা একটা কেতাদুরস্ত চেহারায় নিজেদেরকে প্রকাশ করতে চাই। এবং বন্ধু যখন বাড়িতে যায়, মাকে বলিস– ‘আমি ভালো আছি’। 

যমুনা অনলাইন: এই গানটি পরে অনেকেই গেয়েছে। ঘরে ফেরার তীব্র আকুলতায় অনেকেরই মন কেঁদেছে।

লতিফুল ইসলাম শিবলী: হ্যাঁ। এটার মধ্যে এক ধরনের বেদনা আছে, যাতনা আছে। মানে পরিচয় সংকট আছে। আমরা যারা মফস্বল শহর থেকে এসে ঢাকা শহরে লড়াই করি, কখনও কখনও পরিচয় সংকটে ভুগি। এখন শহর আর গ্রামের পার্থক্য অতোটা নেই। আমাদের সময় তো খুব প্রকট ছিল। ঢাকা তখন একমাত্র শহর ছিল। এখন সবটাই শহর হয়ে গেছে। এখন আলাদা গ্রাম বলে কিছু নেই।

যমুনা অনলাইন: কত বছর এই উপন্যাস লেখার যাত্রা চলবে আপনার? আজীবন? 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: না। আজীবন বলতে তো কিছু নেই। যে কয়দিন আল্লাহ সুস্থ রাখবে, আমি ঠিক থাকবো, লিখতে পারবো। ইনশাআল্লাহ তায়ালা সেই কয়দিন। 

যমুনা অনলাইন: আপনার এই লেখালেখির যাত্রা শুভ হোক। যমুনা অনলাইনকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। 

লতিফুল ইসলাম শিবলী: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

/এএম  

 

 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply