ব্যাংক একীভূতকরণ: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

|

ছবি: সংগৃহীত

দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতি না হলে ভালো অবস্থানে থাকা ব্যাংকগুলোর সাথে একীভূত করা হবে। আগামী বছরের মার্চ মাসে এর বাস্তবায়ন শুরুর কথা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে, ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর মানদণ্ড নির্ধারণে নীতিমালাও ঘোষণা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, এ বছরের শেষে ব্যাংকগুলোর অডিটের ব্যালেন্স শীটের ভিত্তিতে কোন ব্যাংকের অবস্থান কোথায় তা পরীক্ষা করা হবে। সেখানে খেলাপী ঋণের পরিমাণ, মূলধন, তারল্য ও সুশাসনের বিষয় মূল্যায়নের পাশাপাশি এই চারটি বিষয়ের ওপর ব্যাংকগুলোর র‍্যাংকিং করা হবে।

এদিকে, উদ্যোগটি ইতিবাচক হলেও এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, জোর করে একীভূতকরণের উদ্যোগ সফল হবে না। কারণ, কোনো ভালো ব্যাংক খারাপ ব্যাংকের দায়িত্ব নিতে রাজি হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, একীভূতকরণ বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন হবে। দুর্বল ব্যাংকগুলোতে ব্যালেন্স শীটের অবস্থা নাজুক। তাছাড়া সুশাসনেরও অভাব রয়েছে। এ অবস্থায় ভালো ব্যাংকগুলোর রাজি হওয়ারও একটা বিষয় রয়েছে। এ সময়, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ইনটেনসিভ দেয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

বিআইবিএম’র সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ভালো ব্যাংক কখনোই একীভূতকরণে রাজি হবে না। কারণ, তাহলে ভালো ব্যাংকগুলোও দুর্বল হয়ে যাবে।

এছাড়াও, একীভূতকরণের আগে দুর্বল ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের দায় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

প্রসঙ্গত, দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা নাজুক। কোনো কোনো ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকই খেলাপি। তারল্য সংকটের কারণে বিধিবদ্ধ জমা সংরক্ষণেও ব্যর্থ অনেক ব্যাংক।

উল্লেখ্য, ব্যাংক কোম্পানি আইনে বাংলাদেশ ব্যাংকে একীভূতকরণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তাই, যে কোনো উপায়ে দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

/আরএইচ/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply