হুইল চেয়ারে সবুজ ভালোবাসার রঙ

|

২০০৩ সালে চাকরি সূত্রে সৌদি আরবে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান হেদায়েতুল আজিজ মুন্না। ২০০৮ সালে সেখানে এক সড়ক দুর্ঘটনায় এলোমেলো হয়ে যায় মুন্নার জীবন। প্রাণে রক্ষা পেলেও মেরুদণ্ডে আঘাতের কারণে চিরতরে হারিয়ে ফেলেন হাঁটাচলার ক্ষমতা।

দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয় পক্ষাঘাত পুনর্বাসনকেন্দ্র সিআরপিতে। সেখানেই ২০০৮ সালে পরিচয় ইন্টার্ন ফিজিওথেরাপিস্ট লাকী আক্তারের সঙ্গে। লাকীর পরিচর্যায় ধীরে ধীরে সুস্থ্ হয়ে ওঠেন মুন্না। ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, বাকি জীবনটা একসঙ্গে কাটানোর।

এক্ষেত্রে সমাজ আর পরিবারের বাধা উপেক্ষা করে নজির সৃষ্টি করেছেন ফিজিওথেরাপিস্ট লাকী আক্তার। দুজনে মিলে কাটিয়ে দিয়েছেন একযুগের বেশি সময়। স্ত্রীর ভালোবাসায় হুইল চেয়ারে আটকা স্বামী পেয়েছেন নতুনভাবে বেঁচে থাকার প্রেরণা। কোল আলো করে এ জুটির ঘরে এসেছে ফুটফুটে এক সন্তান।

এ প্রসঙ্গে হেদায়েতুল আজিজ মুন্না বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেখা হতো, কথা হতো। মাঝেমধ্যে আমার খোঁজখবর নিতো। এভাবে কথা বলতে বলতে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে, এই অবস্থাতেই আমরা বিয়ে করে ভালো থাকতে পারব।

তিন বছর পর মুন্না প্রতিষ্ঠা করেন ড্রিম ফর ডিজঅ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন (ডিডিএফ)। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণদের স্বনির্ভর করতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া, সংগঠিত করেছেন ডিডিএফ হুইল চেয়ার ক্রিকেট টিম ও ফুটবল দল। এসব উদ্যোগে তার পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন স্ত্রী লাকী আক্তার।

ফিজিওথেরাপিস্ট লাকী আক্তার বলেন, ভালোলাগাটা তো কোনো হিসেব কষে হয় না। এটা যথার্থরুপে কেউ বলতে পারবে না যে, কেন ভালোবেসেছি। সমাজের চোখে তাকে হয়তো অসুস্থ মনে হয় কিন্তু আমার কাছে তা মনে হয় না। আমার চোখে তিনি একজন স্বাভাবিক মানুষ। আমরা অনেক ভালো আছি।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply