রিমন রহমান:
আজ পেঁয়াজ তো কাল আলু। চাল, তেল কিংবা চিনি কিছুতেই মিলছে না স্বস্তি। বাজারে গিয়ে কোনো কিছুতেই হাত দেয়ার উপায় নেই। দিন যায়, বাড়ে দাম। যে হারে বাড়ে, সেই হারে কমার কোনো লক্ষণই নেই। নাভিশ্বাস অবস্থা সীমিত আয়ের মানুষের।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে আরও বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারি মাসে বেড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতি। অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে পণ্য কিনতে এখন ক্রেতাকে প্রায় ১০ ভাগ অর্থ বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরেই চলমান রয়েছে এমন অস্বস্তি। কিন্তু সেক্ষেত্রে বাড়েনি আয়। এদিকে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ৬ শতাংশ।
ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সরকার কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রয় করছে, কিছু পণ্যের দাম ঠিক করে দিচ্ছে। এগুলোতে কিছু মানুষের উপকার হলেও সার্বিকভাবে খুব বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে না।
এদিকে, খাদ্য বর্হিভূত খাতে বেড়েছে মূল্যস্ফীতির হার। গত নভেম্বর মাস থেকেই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এই খাতের মূল্যস্ফীতি।
তবে, সামান্য কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। তাও এর হার সাড়ে ৯ ভাগের বেশি। গত নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১০ শতাংশের বৃত্ত ছাড়ায়। বলা হচ্ছে ভুল সিদ্ধান্তে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি।
অর্থনীতি বিশ্লেষক ড. সায়েম আমীর ফয়সাল এ বিষয়ে বলেন, কেনো উচ্চ মূল্যস্ফীতিটা হলো? কারণ আমাদের আন্ডার প্রোডাকশনের বড় ধরনের সমস্যা ছিল। আমাদের সাপ্লাই চেনেরও বড় ধরনের সমস্যা ছিল।
অতি পরিমাণে ঋণ পরিশোধ আর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে গত অর্থবছরে ১ লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছাপানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। বললেন, যখন অত্যাধিক পরিমাণ সাপ্লাই আর অধিক তারল্য দিয়ে বাজারকে সম্পূর্ণভাবে ওভারসাপ্লাইয়ে পরিণত করতে যাবে তখন স্বাভাবিকভাবেই টাকার মান কমে যাবে। সেটা ডলারে বিপরীতে হোক কিংবা রুপি বা পাউন্ডের বিপরীতে হোক।
বিশ্লেষকদের কথানুযায়ী, সহসাই মূল্যস্ফীতি কমার তেমন সম্ভাবনা নেই। তবে, মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা, বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা গেলে কিছুটা সুফল মিলবে। এছাড়া, নিম্নবিত্ত শ্রেণির পাশেও দাঁড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
অর্থনীতি বিশ্লেষক ড. সায়েম আমীর ফয়সাল বলেন, দাম বাড়ছে কারণ ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাচ্ছে, এটা ঠিক আছে। আমদানিসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা বোধগম্য। তবে আলুর দাম কী কারণে বাড়ছে? এগুলোর কারণ যদি এখনই অনুসন্ধান করে ঠেকানো না হয় তাহলে ভবিষ্যতে দশ হাজার টাকার নোট ছাপাতে হবে। তবুও আমাদের ক্রয় ক্ষমতা বাড়বে না।
/এমএইচ/এমএন
Leave a reply