আলো ঝলমলে বেইলি রোড এখন শোকে স্তব্ধ

|

এমন লিপ ইয়ারের দিন কি কেউ কল্পনা করেছিলেন? নিমিষেই আলো ঝলমলে বেইলি রোড রূপ নেবে মৃত্যুপুরিতে! লিপ ইয়ারের দিন অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখ থাকায় দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে অনেকেই পরিবার-প্রিয়জনের নিয়ে সময় কাটাতে জড়ো হয়েছিলেন রেস্টুরেন্ট ও কাপড়ের শো-রুম ভরা ভবনটিতে।

সাপ্তাহিক ছুটির আগের রাতে বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের এ অংশের খাবার দোকানগুলোতে বরাবরই ভিড় থাকে। ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতও ছিল অন্য এক রাতের মতই। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর খাবারের স্বাদ নিতে কিংবা স্বজনদের সঙ্গে খাবার আনন্দ ভাগ করতে তারা এসেছিলেন ছোট ছোট দলে। সেই আনন্দ আয়োজন এক আগুনে পরিণত বিষাদপুরীতে।

রাত পৌনে ১০টার দিকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত। এরপর শুরু হয় ছুটোছুটি। চারদিকে হৈচৈ পড়ে যায় আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে। পথচারী আর আশপাশের দোকান ও ভবন থেকে মানুষ ভিড় করতে শুরু করে আগুন লাগা ভবনটি ঘিরে।

নিচ থেকে আগুন উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে ভবনের বিভিন্ন তলায় থাকা মানুষের বের হওয়ার কঠিন হয়ে পড়ে। এলোমেলো ছু্টোছুটি শেষে সবাই গিয়ে জড়ো হতে থাকেন উপরের দিকে। এক পর্যায়ে নিচ থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুন আর ধোঁয়া থেকে বাঁচতে সবাই ভিড় করেন ছাদে। এরমধ্যেই ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের একের পর এক ইউনিট। এগুলোর কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আটকা ব্যক্তিদের উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। শুরুতে আগুন থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়ে আহত হন কয়েকজন।

আগুন নেভানোর মধ্যেই নারী ও শিশুসহ জীবিত ৭৫ জনকে উদ্ধার করা হয়। ছাদে জড়ো হওয়াদের মধ্যে অচেতন অবস্থায় ৪২ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর তথ্য দেয় ফায়ার সার্ভিস।

প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিভিয়ে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। এরপরই আসতে থাকে একের পর এক মৃত্যুর খবর। প্রথম তিনজন এরপর তা বেড়ে ১১ এবং ২০ জনের খবর আসে হাসপাতাল থেকে। শেষমেষ রাতে ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply