আহমেদ রেজা
সংকট, সংগ্রাম ও সম্ভাবনার সব খবরে যমুনা টেলিভিশন আছে মানুষের পক্ষে, মানুষের সঙ্গে এবং মানুষের জন্যে। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালোই বলতে চেয়েছে যমুনা টেলিভিশন। তাই সফলতার ঝুলিতে যুক্ত হয়েছে ‘নাম্বার ওয়ান’ তকমা আর দর্শকপ্রিয়তা।
পেশাদারিত্বে দেশের শীর্ষ সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন পিছপা হয়নি এক বিন্দুও। আছে চৌকস রিপোর্টার, যারা চ্যালেঞ্জকে ‘চয়েস’ বানিয়ে খবরের পেছনে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে লেগে থাকা একঝাঁক অকুতোভয় নিবেদিত প্রাণ। দর্শক ও পাঠকের কাছে দ্রুত ও সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়াই যাদের মনন ও মস্তিস্কে।
ক্যামেরা লেন্সে খবরকে জীবন্ত করে তুলে ধরেন ভিডিও জার্নালিস্ট। মাঠের গল্পকে দর্শক নন্দিত করতে শেষ বিন্দু পর্যন্ত চেষ্টা থাকে তাদের। সম্পাদনার নিঁখুত হাতে মাটি ও মানুষের সেই গল্পে মেলবন্ধন ঘটান ভিডিও এডিটর। মাঠের ঘটনাকে চিত্রগল্পে সাজান তারা।
দায়িত্ব যখন নির্ভুল উপস্থাপনা, তখন সব মনোযোগ যেন সংবাদে। তাই লাইট-ক্যামেরায় আলোকিত স্টুডিওতে কাউন্ট-ডাউন আর অ্যাকশনে চলতে থাকে পেশাদারিত্ব।
প্রোডাকশন টিম ‘দ্য বেস্ট’। কেন? নির্দেশনা আর মাঠের রিপোর্টারের সঙ্গে কানেকশনের চ্যালেঞ্জ সামলান দারুণ মুন্সিয়ানায়। সময়কে নিয়ন্ত্রণ করে মাস্টার কন্ট্রোল রুমের সাথে যাদের মিতালি চলে পর্দায়।
সেকেন্ড, মিনিট কিংবা ঘণ্টার বিরতি থাকলেও অবিরত জেগে থাকে নিউজরুম। যাকে সংবাদের ‘আঁতুড়ঘর’ বলা হয়। সেখানেই মূল কাজটা করেন টেলিভিশনের পর্দার পেছনে থাকা শত মুখ, যারা আনসাং হিরো। সাথে সৃষ্টি হওয়া সংবাদের কাঠামো, বিশ্লেষণ বা নীতি-কৌশল নির্ধারণে যুক্ত হন দক্ষ নিউজ এডিটর।
রয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট ডেস্ক। সংবাদের সকল ডট একত্রিত করেন যারা নিবেদিত প্রাণে। শতভাগ পরিশ্রমে এখানকার সদস্যরা যেন একেকজন ‘হারকিউলিস’।
জটিল সমীকরণের ব্যবসা-বাণিজ্য আর অর্থনীতির সহজ উপস্থাপন করে দ্য বিজনেস টিম। মুন্সিয়ানায় যুক্ত আছে মানুষের পক্ষে কথা বলার সৎ সাহস।
সাকিব-জামাল কিংবা সাবিনা-জ্যোতিদের কথা সবার আগে দর্শকদের সামনে আনে যমুনা স্পোর্টস টিম। তারুণ্যে ভরপুর এই টিম মানেই সাফল্যের সেঞ্চুরি।
প্রান্ত থেকে কেন্দ্র, সব খবর সবার আগে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সদা জাগ্রত ‘টিম সারাদেশ’। যত্নশীল ও নির্ভুল সংবাদ পরিবেশনে আন্তরিক।
তবে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া; দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে টিম যমুনার প্রাণ। যাদের নিরন্তর পরিশ্রমে যমুনা হয়েছে গণমানুষের টেলিভিশন।
গাজায় নৃশংস হত্যাযজ্ঞ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পরিস্থিতি। দর্শকদের কাছে আন্তর্জাতিক সংবাদ এতোটা জনপ্রিয়, এর আগে কে করেছে কবে? ‘যমুনা আইডেস্ক’ মানেই দর্শকদের সংবাদের খোরাক।
দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে যমুনা টেলিভিশনের অ্যাসাইনমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং এডিটর রোকসানা আনজুমান নিকোল বলেন, দশ বছরে প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা মুহূর্ত কাজ করেছে টিম যমুনা। প্রতিটা ফ্রেম নিয়ে ভেবেছে, পরিশ্রম করেছে তারা। তাই দর্শকও তা ফেরত দিয়েছে বহুগুণে। আমরা একটি প্ল্যাটফর্মে নাম্বার ওয়ান হয়েছি। এটা যেমন আমাদের অর্জন, এটা বাংলাদেশেরও অর্জন।
বিনোদন দুনিয়ার সংবাদে এত মিষ্টতার ডালি খুলে দেয়া হয়েছে কে আর কবে? সিন কিংবা বিহাইন্ড দ্য সিন সব গল্পই সৃষ্টিশীল। পুরো অনুষ্ঠান বিভাগই ব্যস্ত দর্শকদের ভিন্ন কিছু উপস্থাপনের।
যমুনার অনুসন্ধান মানেই মানুষের ভাগ্য বদলের নথিপত্র। ‘ইনভেস্টিগেশন থ্রিসিক্সটি ডিগ্রি’ পুরো দেশকে রেখেছে আতশি কাঁচের আওতায়।
যমুনা টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, চটকদার সংবাদ বা পক্ষপাতমূলক পরিবেশেও কীভাবে বস্তুনিষ্ঠ থাকা যায়, তা দেখিয়েছে যমুনা টেলিভিশন। দর্শক যে তথ্য পাওয়ার অধিকার রাখে, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। সেটা আমরা সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছি।
বিশ্বে বাংলাদেশকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাম্বার ওয়ান করার পেছনে অবদান আছে এই তরুণ তুর্কিদের। ‘টিম ডিজিটাল’ পেশাদারিত্ব আর মানুষের সাথে সংযোগে সদা অন্তঃপ্রাণ।
দশম বর্ষপূর্তিতে যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ বলেন, গণমাধ্যম তখনই শক্তিশালী হয়, যখন ম্যানেজমেন্ট এখানে ইন্টারফেয়ার করে না এবং গণমাধ্যম গণমাধ্যমের মতো করে চলতে পারে। আমাদের ম্যানেজমেন্ট কোনো বিষয়ে ইন্টারফেয়ার করে না। এটা বিশাল শক্তি আমাদের জন্য। এই শক্তির ওপর ভর করে আমাদের কর্মীরা কাজ করেছে। তা দেখেছে দর্শক। দর্শকরাও আজ আমাদের বড় শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
যমুনার ক্রিয়েটিভ টিমের মুন্সিয়ানা আপনি পর্দাতেই বুঝতে পারবেন। স্মার্ট উপস্থাপনে এই টিম বিশ্বমানের। স্যাটেলাইটের সাথে বন্ধুতা গড়ে প্রযুক্তির শীর্ষে এই বিভাগ। কাজে সবশেষ সংযোজন যুক্ত করাই যাদের নেশা। লিঙ্ক রুম, যোগাযোগ ও আর্কাইভ বিভাগের সদস্যরাও পাকাপোক্ত করেন সামনে থাকার লড়াইয়ের পথ।
প্রিয় কর্মীদের দুধেভাতে রাখতে যমুনা টেলিভিশনের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মযজ্ঞ। সাথে বিপণন বিভাগ আর হিসাব বিভাগের কর্মীরা সেই লড়াইয়ে যুক্ত করেন বাড়তি রসদ। এমনি করেই সাফল্যের গল্প যুক্ত হয় বর্ণালি পালকে।
সমন্বয় বিভাগ ও ট্রান্সপোর্ট বিভাগও সদা প্রস্তুত এই লড়াইয়ে। আছে ক্যামেরা স্টোর, মেইনটেন্যান্স বিভাগ, দক্ষ টেকনেশিয়ান ও রিসিপশন টিমও। যাদের সবার অংশগ্রহণেই নাম্বার ওয়ান টিম যমুনা।
প্রিয় দর্শক ও পাঠক, আজ (৫ এপ্রিল) যমুনা টেলিভিশনের জন্মদিন। হাঁটি হাঁটি পা পা করে দশ বছর পাড়ি দেয়া হলো। এই এক দশকের পথচলায় আপনারা ভালোবাসা দিয়েছেন দুহাত ভরে। টিম যমুনা আপনাদের ভালোবাসায় কৃতজ্ঞ। কথা দিচ্ছি, দায়বদ্ধতা নিয়ে নির্ভুল সংবাদ পরিবেশনে যমুনা টেলিভিশন থাকবে অবিচল। যমুনা টেলিভিশন– সামনে থাকে, সামনে রাখে।
/এএম
Leave a reply