‘আন্দোলন দমনে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে সরকার’, বিএনপির কারাভোগীদের দাবি

|

সাইফুদ্দিন রবিন:

ঢাকায় পদযাত্রা, সভা-সমাবেশের ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করছিল বিএনপি। এসবের মাঝেই গত বছর ২২ মে গ্রেফতার হন দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। নয় মাসের বেশি জেলে খেটে সম্প্রতি জামিনে বেরিয়েছেন তিনি।

রফিকুল আলম মজনু বললেন, ঘটনার দেড় বছর পর আমাকে গ্রেফতার করা হয়। জেলে যাওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে ১০টা মামলা দিয়েছে।

এর মধ্যে, ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমান উল্ল্যাহ আমান। তখন তার পদ ছিল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। নভেম্বরের শুরুতে তাকে গ্রেফতার করা হয় পুলিশ হত্যা মামলায়।

তিনি বলেন, মামলার এজহারে উল্লেখ আছে, ২টা ৪৫-এ এই ঘটনা ঘটে। আর আমি ৩টা ২৩-এ ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম।

শুধু সক্রিয় দলীয় কর্মী নন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে গ্রেফতার হন বিএনপিমনা পেশাজীবী নেতাকর্মীও। যেমন বলা যেতে পারে টেকনোলজিস্টদের সংগঠন এমট্যাব মহাসচিব বিপ্লবউজ্জামান বিপ্লরেব কথা।

মুক্তি পাওয়ার পর এসব নেতাকর্মীর বাসায় বাসায় যেয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। গ্রেফতার, রিমান্ড ও কারাগারের দিনগুলোকে অমানবিক বলে উল্লেখ করছেন তারা।

আমান উল্ল্যাহ আমান জানান, সিটিটিসি ও ডিবি পুলিশের আবেদনে তিনি মোট ১৬ দিন রিমান্ডে ছিলেন। সহস্র নেতাকর্মীকে এরকম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

আর রফিকুল ইসলাম মজনু বলেন, জেলে দেখি ছাত্রদলের একটা ছেলের নক নাই, পা ভাঙা। এবারের মতো নির্যাতন আগে আমার চোখে পড়েনি।

বিপ্লবউজ্জামান বিপ্লব বলেন, বিএনপির গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের সাথে কারা আইন অনুযায়ী আচরণ করা হয়নি।

বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের মূল অভিযোগ, আন্দোলন দমনে তাদেরকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিল সরকার। তবুও তারা হতাশ হননি। কারামুক্তির পর তারা এখন সরকার হটানোর লড়াইয়ে সামিল হবেন।

এদিকে, ২৮ অক্টোবরের পর হওয়া অসংখ্য মামলায় বিএনপির অনেকে আসামি হন। পলাতক বা আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদেরকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর কারাগারে যেতে হচ্ছে। এছাড়া, বিগত সময়ের বহু মামলায় অনেক নেতাকর্মীর সাজা হয়। সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের অনেককেও কারাগারে যেতে হচ্ছে।

গ্রেফতারের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নেতাকর্মীদের সাথে জেলে চোর-ডাকাত, মাদক কারবারিদের মতো ব্যবহার করা হয়েছে। সব ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন করছে।

বিপরীতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, এগুলো হলো বিএনপির গৎবাধা কথা। বিদেশি যারা আসে, তাদেরকে নালিশ দিতে দেয়। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ খুন করেছে। এগুলোর মামলা হয়েছে। সেই মামলার আসামিরা কারাগারে গেছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সাংবাদিকরা খোঁজ নিক, দেখুক কোনো নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে কি না।

বিএনপির তথ্য অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ২৫ হাজার ২৮২ নেতাকর্মী। আর গত ১৫ বছরে আসামি হয়েছেন দেড় লাখ।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply