আলমগীর স্বপন:
তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ সংকটে মফস্বলের মানুষ। গ্রামীণ জীবনযাত্রায় এর প্রভাবও পড়ছে চরমভাবে। কৃষি উৎপাদনের পাশপাশি ধুঁকছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। যদিও ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণেই কিছুটা সংকট।
তবে, জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, শহর ও মফস্বলে বিদ্যুৎ বিতরণে চরম বৈষম্য আছে। এজন্য তারা ভুল জ্বালানি নীতিকে দায়ী করেছেন।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান চালাতে যমুনা টিভির এই প্রতিবেদক পৌঁছে যায় ঠাকুরগাঁয়ে। কথা হয় সেখানকার গরেয়ার লস্করা গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলামের সাথে। তীব্র গরমে আইলে বসে তদারকি করছিলেন সবজি চাষের জমি প্রস্তুতির কাজ।
তবে, পানির অভাবে নিজের ১০ একর জমিতে চাষাবাদ নিয়ে চিন্তিত তিনি। ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে সময়মতো জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তার মতো একই অবস্থা সেখানকার আরও অনেক কৃষকের। অভিযোগ করেন, দিনের বেশিরভাগ সময়েই বিদ্যুৎ থাকে না। মফস্বলের এমন বিদ্যুৎ বিপত্তি দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় চরমভাবে আঘাত করছে বলেও জানান তারা।
একই অবস্থা দেখা গেছে নীলফামারী ডিমলার টুনিরহাট ও বাবুর হাটের কৃষকদেরও। জানান, সেচের কাজে প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে, ব্যহত হচ্ছে। একদিক দিয়ে পানি দিলে আরেকদিক দিয়ে শুকিয়ে যায়। দুই-তিন ঘণ্টা পরপর আসে, আধঘণ্টা পর আবার চলে যায়।
শুধু কৃষি নয় বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ধুকছে মফস্বলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বলছেন, যে মাত্রায় বিদ্যুৎ পাচ্ছেন তাতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন দায়।
যদিও নীলফামারী-১ আসনের এমপি আফতাব উদ্দিন সরকার দাবি করছেন, এদিকে বিদ্যুতের সার্ভিস ভালো, সংকট কম। বরং গ্রামে এসি ও বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়েছে। আমাদের একটু সচেতন হতে হবে।
গরমে দেশে বিদ্যুৎের সর্ব্বোচ চাহিদা সাড়ে ১৭ হাজার মেগাওয়াট। ৩০ এপ্রিল ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট উৎপাদনের রেকর্ড জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এরপরও মফস্বলের কোথাও কোথাও ৮ থেকে ১০ ঘন্টার লোডশেডিং কেন হচ্ছে?
উত্তরে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চাহিদা অনুযায়ী যে জ্বালানি দেয়া হয়, সেই জ্বালানি সরবরাহের কোনো নিশ্চয়তা এ সমস্ত কতৃপক্ষের নেই। আমরা সংযোগ দিতে পেরেছি, বিতরণ লাইনও আছে।তবে, শতভাগ বিদ্যুৎ দেয়ার মতো আমরা সক্ষমতা অর্জন করতে পারিনি। যা দিন দিন আরও অনিশ্চিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ খাতের ভূল নীতি থেকে বের না হলে কৃষি উৎপাদন সামনে আরও সংকটে পরবে বলেও জানান তিনি।
/এমএইচ
Leave a reply