বার্নাব্যুকে বিদায় জানালেন টনি ক্রুস; কাঁদলেন, কাঁদালেনও

|

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেললেন টনি ক্রুস। ঘরের মাঠে এক আবেগপ্রবণ ও স্মরণীয় বিদায় পেলেন অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডার। গার্ড অব অনার, তাকে শূন্যে ছুঁড়ে অভিবাদন জানানো—ক্রুসের বিদায়বেলার সম্ভাব্য সব রীতিই যেন পালন করা হয়েছে বার্নাব্যুতে। ম্যাচ শেষে নিজের সন্তানদের জড়িয়ে ধরে কেঁদেছেন দেশ ও ক্লাবের হয়ে সব বড় ট্রফি জেতা ক্রুস।

আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, এই মৌসুম শেষে রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়বেন। আর ইউরো শেষে ফুটবলকেই বিদায় জানাবেন। এই ঘোষণার পর গতরাতে সবার চোখ ছিল টনি ক্রুসের দিকে। লা লিগার এই মৌসুমের শেষ ম্যাচে রাতে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে মাঠে নামে রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচটি ছিল হোম ভেন্যু সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। ১০ বছর ধরে যে মানুষটি রিয়ালের মাঝমাঠকে দক্ষ সেনার মতো আগলে রেখেছিলেন ঘরের মাঠে তাকে বিদায় দেয়ার সময় আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হবে এটিই ছিল অনুমেয়। ম্যাচ শেষে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি।

আবেগ ধরে রাখতে পারেননি ক্রুস। সন্তানকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন

রিয়াল বস বলেন, বার্নাব্যু টনি ক্রুসকে সেভাবে বিদায় দিয়েছে, যা তার প্রাপ্য। টনি ক্রুসের বিকল্প নেই, হয় না। সে অনেক সাহসী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেটা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। সে অসাধারণ এক খেলোয়াড়, একজন গ্রেট ফুটবলার।

বার্নাব্যুর ম্যাচে পুরো স্টেডিয়ামই যেন ছিল ক্রুসময়। তাকে গার্ড অব অনার দিয়েছেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এ সময় রিয়ালের সব খেলোয়াড়দের গায়ে ছিল ক্রুস লেখা ৮ নম্বর জার্সি। গ্যালারিতে দুই দলের সমর্থকরাও ‘ক্রুস ক্রুস’ ধ্বনি তুলে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান ‘স্নাইপার’ খ্যাত এই মিডফিল্ডারকে। মাঠের দক্ষিণ পাশে লাগানো ছিল ক্রুসের ছবি আঁকা বিশাল এক ব্যানার। যেখানে রিয়ালের হয়ে ক্রুসের ২২টি ট্রফি জেতার কথা উল্লেখ ছিল। আর পাশে আরেকটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ধন্যবাদ তোমাকে, কিংবদন্তি।’

ম্যাচের ৮৭ মিনিটে ক্রুসকে যখন তুলে নেয়া হয়, তখনও দেখা মেলে একই রকম দৃশ্যের। দুই দলের খেলোয়াড়রা হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানান ক্রুসকে। মাঠ ছেড়ে যেতে যেতে হাত উঁচিয়ে বিদায়ী অভিবাদনের জবাব দেন ক্রুস। তবে সবচেয়ে আবেগপ্রবণ দৃশ্যটি দেখা যায় বিদায়বেলায় সন্তানদের কাছে যাওয়ার পর। অঝোরে কাঁদতে থাকা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আবেগ আর সামলাতে পারেননি তিনি। তার সাথে আবেগী হয়ে পড়েন সমর্থকরাও।

আবেগী টনি ক্রুস বলেন, আমার সন্তানদের প্রতিক্রিয়া আমাকে ভেঙেচুরে দিয়েছে। আমি শুধু বলতে পারি, রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলাটা সহজ নয়। আমি রিয়াল মাদ্রিদকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি এখানে ক্যারিয়ারের ১০ বছর উপভোগ করেছি। রিয়াল মাদ্রিদ ছিল আমার ঘর।

দুই দলের খেলোয়াড়দের গার্ড অব অনার পান ক্রুস

বার্নাব্যুকে বিদায় বললেও রিয়ালের জার্সিতে পথচলা শেষ হয়নি ক্রুসের। ওয়েম্বলিতে আগামী ১ জুন রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হবে রিয়াল। সেদিন শেষবারের মতো রিয়ালের জার্সিতে দেখা যাবে ক্রুসকে। রিয়ালের জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগের পঞ্চম শিরোপা জিতে বিদায়কে আরও একবার রঙ্গিন করার অপেক্ষায় তিনি।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply