চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই ডর্টমুন্ড অধ্যায়ের ইতি টানতে চান রয়েস

|

মেহেদী হাসান রোমান

মার্কো রয়েসকে বিবেচনা করা হয় তার প্রজন্মের সবচেয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে। কিন্তু তার নিজের শত্রু ইনজুরি। প্রতিটি অ্যাথলেটের জীবনেই ইনজুরি আসে। তবে মার্কো রয়েসের সাথে ইনজুরির সখ্যতা যেন একটু বেশিই। তার দেশ যেবার বিশ্বকাপ জিতলো, কনফেডারেশন কাপ জিতলো সেবার থাকতে পারেননি দলে। ক্রুস-নয়্যাররা অবশ্য বিশ্বকাপ ট্রফি সেলেব্রেশনের সময় তার জার্সি সামনে রেখেছিলো। রয়েসের সতীর্থদেরও বিশ্বাস ছিলো রয়েস আছেন। ক্যারিয়ারে বড় ট্রফি জিততে না পারার আক্ষেপ আর ফুরোয়নি তার।

এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে সেই হতাশা দূর করতে চান বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের এই তারকা। চলতি মৌসুম শেষে ডর্টমুন্ড অধ্যায়ের এক যুগের ইতি টানতে যাচ্ছেন রয়েস। আগামী শনিবার ইউরোপ সেরার শিরোপা লড়াইয়ে রিয়ালকে হারিয়েই দীর্ঘ পথচলার শেষটা রাঙাতে চান ৩৪ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। রয়েস বলেন, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড আমার জীবনের সবকিছু। কোনো ক্লাবে ১২ বছর কাটানোর পর সেটা জীবনের সবকিছু হয়ে ওঠে। উয়েফাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ডর্টমুন্ড ক্যারিয়ার, সেরা স্মৃতি, ওয়েম্বলিতে শেষ করতে পারা, প্রতিপক্ষ হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদ, তার বিদায় সবকিছু নিয়ে কথা বলেন এই জার্মান তারকা।

ডর্টমুন্ডের ভক্তদের নিয়ে রয়েসের আছে আলাদা এক অভিমত। তার মতে পৃথিবীর অন্যতম পাগলাটে ফ্যানবেজের একটি ডর্টমুন্ড ভক্তরা। ক্লাব ছেড়ে চলে যাবার পর তাদেরও মিস করবেন রয়েস। তিনি বলেন, ভক্তদের এই উন্মাদনা ও ইদুনা পার্কের ইয়োলো ওয়াল, অন্য কোথাও এটি খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি তাদের মিস করবো অনেক।

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা কয়েকটি মূহুর্ত নিয়েও কথা বলেন রয়েস। তার কাছে সেরা স্মৃতি হিসেবে চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজিকে হারানো। এছাড়া ১৯৯৭ সালের পর ২০১৩ সালে প্রথমবার ফাইনাল খেলেছিলো ডর্টমুন্ড। সেই ম্যাচেও ছিলেন রয়েস। যদিও ফলাফলে হৃদয় ভেঙেছিলো ডর্টমুন্ডের।

আরও পড়ুন: এক যুগ, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও মার্কো রয়েস

রয়েস ওয়েম্বলিতে ফিরে আসা এবং রিয়াল মাদ্রিদ নিয়েও স্মৃতিচারণ করেন। বলেন, ১১ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আবার ওয়েম্বলিতে নামবো আমরা। একই ভেন্যুতে দুটি মহাদেশীয় ফাইনাল খেলতে পারায় উচ্ছ্বসিত তিনি। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফাইনাল তিনি উপভোগ করবেন এবং তাদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চান রয়েস।

রয়েসের সাথে ডর্টমুন্ডের দীর্ঘদিনের পথচলা।

নিজের বিদায় নিয়ে রয়েস বলেন, ২০১৩ ওয়েম্বলিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল দিয়ে শুরু এবং ২০২৪ ওয়েম্বলিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল দিয়ে শেষ- এরচেয়ে ভালো কিছু হতে পারে কি? আমার ডর্টমুন্ড ক্যারিয়ার চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে।

বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মূল দলে পা রাখার আগে ক্লাবটির যুব দলেও এক দশক কাটিয়েছেন রয়েস। বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখে তিন বছর খেলে ২০১২ সালে ডর্টমুন্ডে পাড়ি জমান তিনি। সেই থেকে ক্লাবটির মূল দলের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪২৮ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১৭০ গোল করার পাশাপাশি করেছেন ১৩১টি অ্যাসিস্টও।

তার অসাধারণ স্কিল, গোল করার দক্ষতা এবং বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবলের জন্য রয়েসকে ‘জীবন্ত কিংবদন্তি’ খেতাব দিয়েছেন ক্লাবটির কোচ এদিন তেরজিচ। গত মৌসুম পর্যন্ত দলকে পাঁচ বছর নেতৃত্ব দিয়েছেন রয়েস। জিতেছেন দুটি জার্মান কাপও। তবে ওই দুটি ট্রফি ছাড়া ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে আর কোনো শিরোপা জিততে পারেননি তিনি।

২০১৩ অল জার্মান ফাইনালের সেই স্মৃতি এবার সাফল্য দিয়ে রাঙাতে চান রয়েস। শেষটা যার ভালো, তার সবই ভালো- এই নীতিতে মার্কোও হয়তোবা বিশ্বাসী।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply