অবশেষে ইউক্রেনকে রাশিয়ায় হামলার অনুমতি দিলেন বাইডেন, তবে কী বলছে অন্য মিত্ররা?

|

মার্কিন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা করতে ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন। তবে এই হামলার অনুমতি শুধুমাত্র ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের আশপাশে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

এ বিষয়ে এক মার্কিন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ইউক্রেন অস্ত্রগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চল খারকিভে হামলার পরিমাণ বাড়িয়েছে পুতিন প্রশাসন। এতে তারা বেশ বড় ধরনের সাফল্যও পেয়েছে। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার খারকিভে একটি আবাসিক ভবনে রুশ হামলায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, দূরপাল্লার মিসাইল হামলা বা আর্মি ট্যাক্টিকাল মিসাইল সিস্টেম দিয়ে রাশিয়ার হামলা না করার নীতি এখনও পরিবর্তন হয়নি।

নতুন নীতি অনুযায়ী ইউক্রেন রুশ বিমানে হামলা করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, ইউক্রেনকে আক্রমণ করতে আসছে এমন রুশ বিমানকে তারা দেশটির ভূখণ্ডের ভেতর ভূপাতিত করতে পারবে।

তবে এ বিষ্যে হোয়াইট হাউজ এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের তাৎক্ষনিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে, মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পশ্চিমা অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। সতর্ক করে পুতিন বলেন, তাদের বোঝা উচিত তারা কী নিয়ে খেলছে। তিনি বলেন, ইউরোপের বহু দেশে ছোট ছোট অঞ্চল রয়েছে এনং ঘন বসতি রয়েছে।

অন্য পশ্চিমা জোট সঙ্গীরা কী বলছে?

মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই অনুমতি দেয়ার আগে বেশ কিছু পশ্চিমা জোট সঙ্গীরা ইউক্রেনকে অনুমতি দেয়ার বিষয়ে মত দেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁক্রো বলেন, যেসব জায়গা থেকে রুশ সেনারা ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে, সেসব জায়গায় হামলা করার অনুমতি দেয়া উচিত।

এছাড়া ন্যাটো চিফ জেন স্টোলেন বার্গ পশ্চিমা অস্ত্র ব্যবহার করে রুশ ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। ন্যাটো প্রধান বলেন, যেহেতু খারকিভ অঞ্চল বর্ডারের কাছাকাছি, তাই বর্ডারলাইন ও ফ্রন্টলাইন প্রায় একই।

চলতি মাসের ৩ তারিখে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ইউক্রেন চাইলে লন্ডনের দেয়া অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালাতে পারে। তবে এটা পুরোটাই তাদের ওপর নির্ভর করে। তিনি বলেন, যেহেতু রাশিয়া ইউক্রেনের ভূখণ্ডে হামলা চালাচ্ছে, তাই খুব সহজেই বোঝা যায়, কেন কিয়েভ তাদের আত্মরক্ষার কথা ভাবছে।

এদিকে ইতালি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনকে নিয়ে তার অবস্থান তুলে ধরে জানান, তার দেশ কখনওই ইউক্রেনে কোনো সৈন্য পাঠাবে না। তবে তাদের দেয়া অস্ত্র শুধুমাত্র ইউক্রেনের ভেতরে ব্যবহার করতে হবে।

ডেনমার্কে্র প্রধানমন্ত্রী তাদের দেয়া অস্ত্র সরাসরি রুশ সামরিক স্থাপনায় ব্যাবহার করতে মত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা যা দিয়েছি তা তারা ইউক্রেনের ভেতরে ও বাইরে দুই ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারে, যদি তা আন্তর্জাতিক আইনকে লঙ্ঘন না করে।

ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশ চেহকিয়ার প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা এক ব্রিফিংয়ে ন্যাটোপ্রধান জেন্স স্টোলেনবার্গের সাথে একমত পোষণ করে বলেন, স্টোলেনবার্গ ও অন্যান্যরা যা বলছেন তা একদম যৌক্তিক। ইউক্রেন রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। আক্রমণের শিকার দেশ হিসেবে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার সব অধিকার রয়েছে।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply