শরিফুল ইসলাম খান:
নানা পরিকল্পনায় হতাশ হওয়া নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে চায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এরপর আন্দোলনের পারদ তুঙ্গে ওঠাতে চায় দলটি। দলটির দাবি, হোঁচট খেলেও নেতাকর্মীরা মাঠ ছাড়েননি বরং সাহস নিয়ে বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা।
সম্প্রতি মামলা-মোকদ্দমার জটিলতা কাটিয়ে চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে রাজপথে সরব অবস্থান রয়েছে দলটির। কোথাও কোথাও সংঘাত-সহিংসতা, হামলা-মামলাও হয়েছে। এরপরও দলটির তৃণমূলের প্রতি দাবি আদায়ে রাজপথে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। আর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুন জোয়ার সৃষ্টি করতে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে আন্দোলন সংগ্রামের সক্ষমতা ও তরুণ নেতৃত্বকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই নিচ্ছে তৃণমূল।
এ বিষয়ে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, যত বাধাই আসুক রাজপথে থাকতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে। বাঁধা পেরিয়েই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কেন্দ্রের বার্তা দলটির তৃণমূলের কাছে পরিস্কার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, যতই অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতন হোক তাদের পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। আন্দোলন করে একদফা দাবি আদায় করেই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবেও জানান তিনি। আর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন মতে, দীর্ঘদীন ধরে দলের আন্দোলন সংগ্রামের সাথে যারা রয়েছেন তাদেরকে নিয়েই কমিটি গঠন করা হোক।
এদিকে, সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। মানুষের মননে গণতান্ত্রিক বোধ জাগিয়ে তুলতে দেশপ্রেম বোঝাপড়ার গল্প নিয়ে কর্মশালাও করছে দলটি। এছাড়া তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে ফুটবল টুর্নামেন্টও আয়োজন করেছে বিএনপি। পাশাপাশি অর্থনৈতিক খাতের অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরতে সব সাংগঠনিক বিভাগে সেমিনার করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, দল উজ্জীবিত ও সুসংগঠিত আছে। বিএনপিকে দমানোর মতো শক্তি আওয়ামী লীগের নেই। সকল বাঁধা অতিক্রম করেই বিএনপি সামনের দিকে তারা এগিয়ে যাবেন।
বিএনপি সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে মানুষকে সচেতন ও জাগিয়ে তোলা হবে। এ সময় নতুন আঙ্গিকে কর্মসূচি নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
তবে দলটির কেউ কেউ মনে করেন, পরিকল্পনা থাকলেও নানা কারণে বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানো খুব সহজ হবে না। কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দিন দিন এক দফা গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। তাই সরকার পতনের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই আন্দোলন জনগণের মুক্তির আন্দোলন। এখানে সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ থাকবে। এমনকি যারা সংগঠনের দায়িত্বে নেই, তারাও থাকবে। দেশ এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, জনগণ এখন মুক্তির পথ খুঁজছে।
/আরএইচ/এনকে
Leave a reply