জিদানের ঢুসকাণ্ড ও ইতালির বিশ্বকাপ জয়ের দেড়যুগ আজ

|

৯ জুলাই, ২০০৬। বিশ্বকাপের ১৮তম আসর অনুষ্ঠিত হয় জার্মানিতে। ১৯৭৪ সালের পর আবারো বিশ্বকাপ আয়োজন করার দায়িত্ব পেয়েছিলো জার্মানি। আগেরবার ছিল শুধু পশ্চিম জার্মানি। তবে ২০০৬-এ একত্রিত জার্মানিই আয়োজক। আজকের রাতেই ফ্রান্সকে হারিয়ে চতুর্থবারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নেয় ইতালি।

তবে সেই ফাইনাল ম্যাচে হয়েছিলো অনেক নাটক। তবে সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্ত ছিল ফ্রান্সের ‘ওয়ান অফ দি গ্রেট’ জিদান কাণ্ড। সেই ঘটনায় আসছি একটু পর।

আর্জেন্টাইন রেফারি হোরাসিও মার্সেলো এলিজোন্ডোর বাঁশিতে ফুঁ দেয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বার্লিনের সেই ম্যাচ। অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ৬৯ হাজার দর্শক।

ম্যাচের প্রথমার্ধের মাত্র ৭ মিনিটের মাথায় ডি-বক্সের ভিতর ফ্রান্সের ফ্লোরেন্ট মালোদাকে ফেলে দেন ইতালির ডিফেন্ডার মার্কো মাতেরাজ্জি। পেনাল্টি!

শুট নিতে আসেন ১০ নম্বর জার্সির জিজু। শুটআউট থেকে ইতালির গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফন কে বোকা বানান তিনি। বারে লেগে গোললাইন অতিক্রম করা বল এগিয়ে দেয় ফ্রান্সকে। ফ্রান্স ১, ইতালি ০!

ছবি: বিবিসি।

খেলার ১৯ মিনিটে চলছে! আন্দ্রে পিরলোর কর্নার। কিককে গোলপোস্টের প্রায় ৬ গজ দূর থেকে হেড করে গোলে পরিণত করেন সেই মার্কো মাতেরাজ্জি, যার ভুলে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স।

দুই দলই নির্ধারিত ৯০ মিনিটের ভিতরই আরো কয়েকবার সুযোগ পায়। তবে কোন দলই আর কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলার নিষ্পত্তি না হওয়ায়, খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

বুফন অতিরিক্ত সময়ের ১৩ মিনিটে দুর্দান্তভাবে নিশ্চিত গোলের দিকে যাওয়া জিদানের একটি হেড ডান হাতে রুখে দেন। কিন্তু এই ম্যাচের আসল মুহূর্ত যে তখনো আসেনি।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে জিদান মাতেরাজ্জির আপত্তিকর মন্তব্যে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং পিছন ঘুরে মাতেরাজ্জির বুকে বসিয়ে দেন ইতিহাসবিখ্যাত এক ঢুস! জিদানের ঢুস খেয়ে উল্টে পড়ছেন মাতেরাজ্জি।

মাঠের রেফারি এটি খেয়াল না করলেও খেয়াল করেন চতুর্থ অফিসিয়াল স্পেনের মেদিনা কান্তালেখো লুইস। তিনি এলিজোন্ডোকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করেন। ম্যাচ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে; মাঠেই মাতেরাজ্জির প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সহকারি রেফারির সাথে আলোচনা করে খেলার ১১০তম মিনিটে এলিজোন্ডো জিদানকে লাল কার্ড দেখান।

ফাইনালে মাতেরাজ্জিকে মাথা দিয়ে আঘাত করায় লাল কার্ড দেখেন জিদান। ছবি: গার্ডিয়ান।

খেলা অতিরিক্ত সময়েও অমীমাংসিত থাকায় টাইব্রেকারে গড়ায়। আর সেখানে সবকটি শট লক্ষ্যভেদ করে ৫ –৩ ব্যবধানে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ফাবিও ক্যানাভারোর ইতালি।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply