প্যারিস অলিম্পিক: ১৭ বছরের জলমানবীর বিশ্বজয়

|

প্যারিস অলিম্পিকে ৪০০ মিটার মিডলে মাত্র ৪ মিনিট ২৭.৭১ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন কানাডার ১৭ বছর কিশোরী সামার ম্যাকিনটোশ। এই ইভেন্টে ম্যাকিনটোশের চতুর্থ দ্রুততম টাইমিং এটি। যদিও এই ইভেন্টের বিশ্ব রেকর্ডও তার। সেটি হলো ৪ মিনিট ২৪.৩৮ সেকেন্ড।

বছর তিনেক আগে অনুষ্ঠিত হওয়া টোকিও অলিম্পিকেই ম্যাকিনটোশের এক ঝলক দেখে নিয়েছিল বিশ্ব। মাত্র ১৪ বছর বয়সে কানাডার সাঁতারু দলের সঙ্গে অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন এই কিশোরী। সেবার অল্পের জন্য পদক গলায় না দিতে পারলেও তিনি যে সাঁতারে কানাডিয়ানদের স্বপ্নজয়ের সারথী হতে যাচ্ছেন সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। যার পূর্ণতা পেলো প্যারিসে এসে। শেষ তিন বছরের সময়ে নিজেকে আরও প্রস্তুত করেছেন ম্যাকিনটোশ। শানিয়েছেন নিজের সাঁতারু প্রতিভা।

এবারের অলিম্পিকে ম্যাকিনটোশের প্রথম চমকটা ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে। যেখানে কিংবদন্তি কেটি লেডিকিকে পেছনে ফেলে রূপা জিতে নেন ম্যাকিনটোশ। এখানেই থেমে থাকেননি। স্বপ্নযাত্রায় বিশ্বজয় করে স্বর্ণপদক জেতা যে তখনও বাকি। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল ৪০০ মিটার মিডলে। যেখানে সবাইকে ছাপিয়ে স্বর্ণপদক গলায় পরেন তিনি।

স্বর্ণজয়ী এই কিশোরী বলেন, এখনও নিজেকে আমার সেই ১০ বছর বয়সী মেয়েটি মনে হচ্ছে। ছেলেবেলায় যে স্বপ্নগুলো দেখেছি, সেই পথ ধরেই ছুটে চলার চেষ্টা করছি। আমি এবং যতদিন সম্ভব চাই এই খেলায় থাকতে। আমার মনে পড়ে, বেড়ে ওঠার দিনগুলোতে প্রতিদিন ক্লাস শুরুর আগে জাতীয় সংগীত গাইতাম। এখন অলিম্পিকে এসে এখানে গলা মেলাতে পারাটা দারুণ।

গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ খ্যাত অলিম্পিকে বিশ্বজয়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ম্যাকিনটোশ বলেছেন, অনুভূতি? আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা (স্বর্ণজয়) অবাস্তব। সোনার পদক জিতে এই পোডিয়ামে দাঁড়ানো আমার স্বপ্ন ছিল। সেটি পূরণ করতে পেরে খুবই খুশি।

এর পরই নিজেকে তৈরি করার গল্প শোনালেন এই তরুণী। বলেন, যতবারই বিশ্বমঞ্চে খেলি, কীভাবে পরিস্থিতি সামলাতে হবে, সেটা সম্পর্কে আরও বেশি করে শিখি। সেটা মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে ও আবেগের জায়গা থেকে। খুব বেশি উত্তেজিত হই না, ভেঙেও পড়ি না। নিজের ফলের ওপর নির্ভর করি।

উল্লেখ্য, ১৭ বছর বয়সী এই কিশোরীর জন্ম কানাডার টরন্টো শহরের অন্টারিওতে। জন্মের পর সাঁতারে অনুপ্রেরণা হিসেবে আইডল হিসেবে বেছে নিয়েছেন মাকে। ম্যাকিনটোশের মা জিল হোর্সটেডও ছিলেন কানাডার বিখ্যাত সাঁতারু। ১৯৮০ ও ১৯৮৪ অলিম্পিকে দেশের পতাকা উড়িয়েছেন। এবার মায়ের পথ ধরে অলিম্পিকের মঞ্চে বিশ্বজয় করলেন কিশোরী ম্যাকিনটোশও। এ যেন পারিবারিক চক্রপূরণ।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply