রাব্বী সিদ্দিকী:
অনিয়মের আখড়া শ্রম অধিদফতর। শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করার কথা; অথচ ঘুষ নিয়ে শ্রমিকদের বিরুদ্ধেই কলকাঠি নাড়েন কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, সিন্ডিকেট করে জিম্মি করেন সেবা প্রত্যাশীদের।
সাইকুল ইসলাম। শ্রম অধিদফতরের উপ-পরিচালক। গার্মেন্ট কারখানার ট্রেড ইউনিয়নের আবেদন বাতিলের জন্য প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন। বিষয়টি শ্রম অধিদফতর নজরে এলে সাময়িক বরখাস্ত হোন তিনি।
গুনে গুনে ঘুষ নিলেও ওই কর্মকর্তাকে রক্ষায় উঠেপড়ে লেগেছে ট্রেড ইউনিয়ন শাখার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা ও গার্মেন্ট মালিকদের জিম্মি করে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ।
বাংলাদেশ রিভোলিউশনারি গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন সভাপতি সালাউদ্দিন স্বপন বলেছেন, শ্রম দফতর যদি ঠিক হয়, তাহলে সমস্ত দুর্নীতি-অনিয়ম দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। তবে, প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি যদি ঠিক করা না যায়, তাহলে মালিকপক্ষকে শুধু দোষ দিলে হবে না।
বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্ট শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল আলম রাজু বলেছেন, অসাধু কর্মকাণ্ড করে পার পেয়ে গেলে, কখনো-ই দুর্নীতি বন্ধ হবে না।
অনুসন্ধান বলছে, বছরের পর বছর শ্রম ভবনেই চাকরি করছেন ওই কর্মকর্তারা। যাদের বিভিন্ন সময়ে বদলি করলেও মাস কয়েক পরই আবারও ফিরে আসেন আগের জায়গায়।
পরিচালক সালাউদ্দিন মাহমুদ।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, প্রধান কার্যালয়ের ট্রেড ইউনিয়ন শাখার পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে-ই গড়ে তোলা হয়েছে ভয়াবহ সিন্ডিকেট। তারাই শ্রম ভবনে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
অভিযোগের বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি এনামুল হক। তবে, সদ্য যোগ দেয়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব দিলেন কড়া হুঁশিয়ারি। জানালেন, অনিয়ম-দুর্নীতির স্থান হবে না শ্রম অধিদফতরে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। অনেক বিষয়ই এখনও স্বচ্ছ নয়। গত মাসের ৮ তারিখ যে সরকার গঠিত হবার পর যে কার্যবিধি দিয়েছে, সেখানে আমাদের পরিবর্তন দরকার।
তবে, কয়েক দিনের মধ্যেই পদোন্নতি, বৈষম্য দূরকরাসহ অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান শ্রম সচিব।
/এআই
Leave a reply