স্টক মার্কেটের সূচক নিয়ে ট্রাম্পের চিন্তিত হওয়া উচিত?

|

আজ যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন। এই নির্বাচনের ওপর যুদ্ধ পরিস্থিতি, অর্থনীতিসহ অনেক কিছুর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। ইতোমধ্যে, আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেয়ার বাজারে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা এপি’র প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এশিয়ার প্রধান বেঞ্চমার্কগুলো ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ-মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল এবং অন্যান্য সম্ভাব্য বাজার-বিক্ষিপ্ত ঘটনাগুলোর জন্য অপেক্ষা করছে বিনিয়োগকারীরা।

তবে, ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশে লাগবে সময়। যার প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়বে বলে ধারনা করছেন বিশ্লেষকরা। মার্কেট অস্থিরতার সম্ভাবনা প্রবল হবার শঙ্কায় মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভও এই সপ্তাহের শেষের দিকে সুদের হার নিয়ে বৈঠক করবে। প্রত্যাশা রয়েছে, টানা দ্বিতীয় বারের জন্য মূল সুদের হার কমিয়ে দেয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০ বড় কোম্পানির স্টক পারফরম্যান্স ট্র্যাক করার জন্য মার্কিন স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস (এস এন্ড পি ৫০০) আর ডো জোন্স ইন্টারন্যাশনালের এভারেজ সূচক ০.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে, দিনের শুরুতে ইউরোপীয় লেনদেনে, জার্মানির ডাক্স স্টক পারফরম্যান্স ট্র্যাক ইনডেক্সে সূচক ০.১ শতাংশ কমে ১৯,১২৫.১৮ এ পৌঁছেছে। অন্যদিকে, পারিসের ক্যাঁক স্টক মার্কেটে সূচক ০.২ শতাংশ কমে ৭,৩৫৬.০২ এ দাঁড়িয়েছে। ব্রিটেনের ফুটসি (এফটিএসই-১০০) স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ০.১ শতাংশ কমে ৮,১৭৯.৭৩ হয়েছে।

চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বিনিয়োগকারীরা বেইজিংয়ের পদক্ষেপের ওপর ভরসা রেখেছে। যার কারণে চীনা বাজারে শেয়ারের দাম বেড়েছে।

এদিকে, হ্যাং সেং স্টক এক্সচেঞ্জ লাফিয়ে ২.১ শতাংশ বেড়ে ২১,০০৬.৯৭ এ দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও, সাংহাই কম্পোজিট সূচক ২.৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৩৮৬.৯৯ এ।

স্টক মার্কেটের সূচক নিয়ে ট্রাম্পের চিন্তিত হওয়া উচিত?

নির্বাচনের একদিন আগেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর দাম বেড়েছে। নির্বাচনের প্রভাব, শেয়ার বাজারের সূচকে পরিবর্তন এবং শেয়ারের দামের নাটকীয় পরিবর্তনগুলো নিয়ে সিএনএন নিউজে প্রতিবেদনে লিখেছেন ম্যাট ইগান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের সেই দলটি ক্ষমতায় থাকবে, যেই দলটির প্রভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মার্কিন স্টক মার্কেট দাম বেড়ে যায়।

বিশ্বের বৃহত্তম স্বাধীন গবেষণা সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম সিএফআরএ স্যাম স্টোভালের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ১৯৪৪ সাল থেকে দুটি নির্বাচন ছাড়া সবকটিতেই যে দল হোয়াইট হাউসে ক্ষমতার দৌড়ে জিতেছে, বেশিরভাগ দল এস এন্ড পি ৫০০-এর সূচক বৃদ্ধিতে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছে। মূলত, এই কারণেই সেই দলগুলো হোয়াইট হাউসে ক্ষমতার গদিতে বসতে সক্ষম হয়।

এই সূচকটি বিজয়ী নির্ধারণ করে দেয়। অন্তত, ৮২ শতাংশ। মানে, নির্বাচনে জেতার জন্য ১০০’র মধ্যে ৮২ শতাংশ নিশ্চয়তা পাওয়া যায় এই সূচক বাড়া কিংবা কমা লক্ষ্য করে।

ঠিক এ কারণেই ট্রাম্প, যিনি স্টক মার্কেটকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াল স্ট্রিটের স্টক রিপোর্ট সম্পর্কে নার্ভাস হওয়া উচিত।

‘এস এন্ড পি ৫০০, জুলাইয়ের শেষ থেকে অক্টোবরের শেষের মধ্যে ৩.৩ শতাংশ অগ্রসর হয়েছে। যদি শেয়ার বাজারে সূচক উপরের দিকে যায় (বুল মার্কেট), তাহলে ক্ষমতাসীন দল সাধারণত জয়ী হয়। যদি বাজার কমে যায়, তাহলে বর্তমান দল প্রতিস্থাপিত হবে। মানে কমালা ক্ষমতায় আসবে না,’ স্টোভাল স্থানীয় সময় সোমবার একটি ফোন সাক্ষাৎকারে সিএনএনকে এসব কথা বলেন।

শেয়ার মার্কেট ড্রপ অর্থনৈতিক সঙ্কটের সংকেত?

অবশ্য, এই শেয়ার সূচক সবসময় সঠিক ছিল না। ১৯৪৪ সাল থেকে মাত্র ২০বার প্রেসিডেন্টশিয়াল ইলেকশন হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নির্বাচনের আগে শেয়ার বাজারগুলো যদি বাড়তে থাকে, তাহলে আসন্ন মন্দা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন নয়। বরং মন্দার কারণে মতায় থাকা দলকে পাল্টানোর অন্যতম বড় কারণ হবে এটি।

শেয়ার বাজার অন্টিসিপেট করে। যদি বাজার নিম্নমুখী হয়, তবে এর প্রধান কারণ হল বিনিয়োগকারীরা উচ্চ হার বা মন্দার প্রত্যাশা করে। উভয়ই ভোটারদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে জানান স্টোভাল। ২০০৮ সালের নির্বাচন তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।

/এআই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply