চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) নাদিয়া জুঁইসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ সোমবার সাপ্তাহিক তদন্ত চিত্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জিয়াউর রহমান বাদী হয়ে ঢাকার হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম কনক বড়ুয়া বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান, এসআই মো. নাছির উদ্দিন তুহিন, এএসআই ফজলু ও মাসুদ, কনস্টেবল আমিরুল, মাদক ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান স্বপন, পুলিশের সোর্স রহমান ও লুঙ্গি ফারুক।
মামলার অভিযোগ বলা হয়, আসামি নুর মোহাম্মদ একজন মাদক ব্যবসায়ী। তিনি আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে চলেন। এলাকায় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নামে মাদকের আখড়া, নারী ব্যবসা ও চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট হিসেবে কাজ করেন। খিলগাঁও থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নেয় না। সাধারণ জনগণ ওই মাদক ব্যবসায়ীর ভয়ে প্রশাসন বা আদালতের আশ্রয় নিলেও অপর আসামি এসি নাদিয়া জুঁইয়ের সহযোগিতার ফলে তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা হয় না। বরং যারা অভিযোগ করেন, এসি নাদিয়া জুঁইয়ের সহযোগিতায় তাদের ভয়ভীতি, হুমকি, হামলা, গুমসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়া হয়।
গত ২৩ জুলাই নুর মোহাম্মদ ও নাদিয়া জুঁইয়ের বিরুদ্ধে সাপ্তাহিক তদন্ত চিত্রে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশ করায় ২৯ জুলাই জিয়াউর রহমানের (বাদী) বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরদিন বাদীর পত্রিকা অফিস ডিআইটি রোড মালিবাগ রেলগেটে পুলিশ অভিযান চালায়। সেখানে নাদিয়া জুঁই ও মশিউর রহমান ছাড়া অপর আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বাদীকে মারধর করা হয়।
ওই সময় অফিস থেকে ৫ লাখ চার হাজার ৪০০ টাকার মালামাল ও তদন্ত চিত্রের ৫০০ কপি নিয়ে যায়। আর এই ঘটনা কাউকে জানালে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে বলে হুমকি দেন নুর মোহাম্মদ।
ওইদিন জিয়াউর রহমানকে গ্রেফতার করা হলেও তার দুদিন পর রামপুরা থেকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। থানা থেকে আদালতে আনার আগে কনস্টেবল আমিরুল বাদীকে মারধর করেন। ওই মামলায় পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত জিয়াউর রহমানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডের সময় আসামি নাছির উদ্দিন তুহিন ও মাসুদ বাদীর স্ত্রী রেশমী রহমানকে ফোন করে এক মাদক ব্যবসায়ীকে মারধর করে তার কান্না শুনিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বাধ্য হয়ে তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন বাদীর ভাই জহিরুল ইসলাম। এসব ঘটনার বিস্তারিত খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমানকে জানালে তিনি বাদীকে আরও মামলার দেয়ার হুমকি দেন।
Leave a reply