গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
স্থগিত হওয়া গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামি ২৭ জানুয়ারী রোববার। মহাজোটের তিন প্রার্থীসহ পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও মুল লড়াইয়ে আছেন আ’লীগ ও জাসদের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। তবে এ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির প্রার্থী।
ভোটাররা বলছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে প্রার্থীর যোগ্যতা ও উন্নয়নে যিনি ভূমিকা রাখবেন দেখে শুনে এমন প্রার্থীকে ভোট দিবেন তারা। তবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণে ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শেষ হয়েছে এ আসনের প্রচার-প্রচারণা। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত প্রচারণা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণা শেষে এখন অপেক্ষা শুধুই ভোটের। শহর থেকে গ্রাম, হাট-বাজার কিংবা চায়ের দোকান সবখানেই এখন হিসেব ভোটের লড়াইয়ের। ব্যানার-পোস্টারে ছেঁয়ে আছে অলিগলি।
সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৩ আসনটিতে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জাপার সাবেক এমপি ড. টিআইএম ফজলে রাব্বীর মৃত্যুতে ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়। পরবর্তীতে পুন:তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ জানুয়ারী এ আসনে ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন।
এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে মহাজোটের আ’লীগ, সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীই আছেন তিনজন। তারা হলেন, আ’লীগের বর্তমান এমপি ডা. ইউনুস আলী সরকার, জাসদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার শিল্পী। অপর দুই প্রার্থীর একজন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ও মিজানুর রহমান তিতু অন্যজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আমেরীকা প্রবাসী আবু জাহিদ নিউ। তবে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ১০ জানুয়ারী নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক।
তবে প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচজনের মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় এগিয়ে আছেন আ’লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি ডা. ইউনুস আলী সরকার ও জাসদের প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এই দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এ কারণে তাদের উপর সবার দৃষ্টিও রয়েছে আলাদাভাবে।
তবে ভোটের মাঠে এবারেই নতুন মুখ জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার শিল্পী। যদিও আসনটি ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির দখলেই ছিল। টানা ছয়বার এ আসনে ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী এমপি নির্বাচিত হলেও এলাকার উন্নয়নে তার কোন অবদান নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
একই সঙ্গে মহাজোটের তিন প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় ভোট ভাগের শষ্কা যেমন রয়েছে তেমনি দ্বিধাদ্বন্দে পড়েছেন নেতাকর্মী ও ভোটাররা। তবে নৌকাকে বিজয়ী করতে তৃণমুলসহ আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন বলে দাবি করেন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শাহ্ মো. ফজলুল হক রানা।
এদিকে, ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বি অপর দুই প্রার্থীর একজন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপির) মিজানুর রহমান তিতু অন্যজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আমেরীকা প্রবাসী আবু জাহিদ নিউ। তবে এই দুই প্রার্থীকে ভোটের মাঠে প্রচারণা ও গণসংযোগে তেমন দেখা যায়নি।
নির্বাচনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠে রয়েছে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতও। সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণে সকল প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়েছেন সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও পলাশবাড়ী উপজেলা ইউএনও মেজবাউল হোসেন।
এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১১ হাজার ৮৫৪ জন। দুই উপজেলার ১৩২টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ৪৫টি ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ও ২৮টি ভোট কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নত করেছে প্রশাসন।
Leave a reply