জর্ডান এবং মিসর সীমান্তে NEOM (নিয়ম) নামের মেগা সিটি তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২৬ হাজার ৫ শ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে নির্মিতব্য এই শহরকে গত বুধবার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ‘স্বপ্নের শহর’ বলে অভিহিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক শহর থেকেও প্রায় ৩৩ গুণ বড় হবে NEOM ।
কী থাকবে এই ‘স্বপ্নের’ এই শহরে? মহাপরিকল্পনার নানা বিবরণ দেয়া হয়েছে প্রকল্পের জন্য তৈরি করা ওয়েবসাইট ‘ডিসকোভারনিয়ম’-এ। সেখানে বলা হয়েছে, NEOM এর মতো কিছুর অভিজ্ঞতা এই পৃথিবীতে আগে কখনো কেউ লাভ করেনি।
মেগা সিটিকে কিভাবে সাজানো হবে সে বিষয়ে ওয়েবসাইটে ৮টি বিষয়ের কথা বলা হয়েছে-
বিদ্যুৎ ও পানি:
মরুভূমিতে পানির সংকট। আর পৃথিবীবাসী আগামীতে জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে চায়। এদিকে সৌদি আরবের তেলের রিজার্ভও ফুরিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় NEOM সিটি কাজ করবে সৌর বিদ্যুতের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানোর জন্য। একই সাথে বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে থাকবে নানা প্রকল্প।
যোগাযোগের কেন্দ্র:
নিয়ম হবে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ কেন্দ্র। বিমান, স্থল ও জলপথে বিশ্বের নানা প্রান্তে যাতায়াতের জন্য ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার হবে এই লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহর।
বায়োটেকনোলজি গবেষণা:
ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘ভবিষ্যত পৃথিবীর নতুন ধরনের নানা স্বাস্থসেবার যাত্রা শুরু হবে নিয়ম থেকে।’ বায়োটেকনোলজি গবেষণায় নতুন মাত্রা আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। থাকবে একাধিক গবেষণাগার।
খাবার:
মরুভূমিতে পানির সংকটের জন্য খাবারেরও সংকট হয়। এ সমস্যা দূর করতে নিয়মে তৈরি করা হবে খাদ্যপণ্য উৎপাদনযোগ্য পরিবেশ। মরুভূমিতে উৎপাদন করা হবে মিলিয়ন মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য।
উৎপাদন কারখানা:
খাবারের বাইরে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে আলাদা প্রজেক্ট থাকবে সেখানে। শুধু বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি নয়, সৌদি আরবে প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে কাজ করবে এই শহর।
মিডিয়া:
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কোম্পানিগুলোর জন্যও নিয়ম হবে এক কাঙ্খিত ঠিকানা। বিশ্বের সেরা সেরা স্টুডিও নির্মিত হবে সেখানে। হলিউড থেকে শুরু করে দুনিয়াজোড়া সেরা পরিচালকরা তাদের ফিল্মের কাজ করতে ছুটে আসবেন NEOM-এ।
বিনোদন:
সাধারণ মানুষের বিনোদনের জন্য থাকবে নজিরবিহীন সব ব্যবস্থা। সমুদ্র উপকূল এ জন্য হবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। এছাড়া পৃথিবীর সেরা থিয়েটার, শপিং মল ইত্যাদি তো থাকবেই।
প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান:
প্রযুক্তির সর্বশেষ নানা বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য উপযোগী ল্যাব ও প্রতিষ্ঠান থাকবে সেখানে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি ইত্যাদির ওপর উচ্চতর গবেষণার মাধ্যমে কিভাবে দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করা যায় তা নিয়ে কাজ করবেন গবেষকরা।
Leave a reply