পাল্টে গেল ওসির বক্তব্য, সেই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

|

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে তিন পুলিশকে পিটিয়ে মুক্ত গোপালদী পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজয় সাহার বিরুদ্ধে অবশেষে মামলা করেছে পুলিশ।

হামলার শিকার গোপালদী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এটিএসআই মো.মামুন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ওই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ইভটিজিংয়ের অভিযোগে বুধবার আটককৃত ছাত্রলীগ কর্মী দিদার ইসলামসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে আড়াইহাজার থানার ওসি আক্তার হোসেন ছাত্রলীগের ওই ২ জনকে আটকের পর ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় বুধবারের দেয়া বক্তব্য পুরো পাল্টে ফেলেছেন।

বুধবার গণমাধ্যমের কাছে পুলিশ সদস্যদের মারধরের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের নিজেদের লোক দাবি করে বলেছিলেন, ‘সব নিজেরা নিজেরা। বিএনপি হইতো একটা কথা আছিলো, ব্যবস্থা নিতে পারতাম।’

পরে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ছাত্রলীগ নেতা সুজয় অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য ও দিদারকে পরীক্ষার জন্য মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু অসুস্থ হয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতা পুলিশকে মারধর করল কীভাবে এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি ওসি আক্তার হোসেন।

দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয়, বুধবার দুপুর ১২টায় গোপালদী নজরুল ইসলাম বাবু কলেজের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অপরাধে দিদার ইসলামকে গোপালদী বাজার থেকে আটক করে পুলিশ। ছাত্রলীগ নেতা সুজয় সাহা আটকের খবর জানতে পেরে দিদারকে ছাড়িয়ে আনতে তদন্তকেন্দ্রে যায়।

এ সময় পুলিশ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এটিএসআই মামুন তার প্রতিবাদ করলে সুজয় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর শুরু করে। পরে সুজয় মোবাইলে তার সহযোগীদের তদন্তকেন্দ্রে এনে পুলিশের ওপর হামলা চালাতে থাকে।

এটিএসআই মামুন জানান, এসব কিছু জানতে পেরে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন তিনি। এ সময় সুজয় ও দিদারকে আটক করে আড়াইহাজার থানায় নিয়ে আসেন।

আর এ ঘটনায় আহত এটিএসআই মামুন, কনস্টেবল আবুল বাশার ও ইমরানকে উদ্ধার করে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় পুলিশের ওপর মামলা দায়ের না করে আটককৃত দিদার ও সুজয়কে আড়াইহাজার থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় পুরো জেলায় পুলিশের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

ওই ২ জনকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে ওসি আক্তার হোসনের কাছে গণমাধ্যমের কর্মীরা জানতে চাইলে বুধবার ওসি জানান, ‘মারধরের কোনো ঘটনা ঘটে নাই। বিএনপি হইতো একটা কথা আছিলো, ব্যবস্থা নিতে পারতাম। আমি আমার বড় স্যারের লগে কথা কইছি। আওয়ামী লীগের নেতারাই আসছিল। ওইভাবেই শেষ কইরা দিছি। এসব নিয়া এখন আর লেখালেখির দরকার নাই।’

কিন্তু বৃহস্পতিবার আড়াইহাজার থানার ওসি আক্তার হোসেন বলেন, ‘আইনিভাবে দুইজনকে ছাড়া হয়েছিল। সুজয়কে অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য ও দিদারকে পরীক্ষার জন্য যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়। তবে এখন যেহেতু মামলা হয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply