লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সকালে গৃহপরিচারিকা (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) জাহানারা বেগম ও দারোয়ান কাম কেয়ারটেকার আবদুল কাদের এ অভিযোগ করেন।
কর্মচারীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর শারমিন জাহান লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর থেকে অধীনস্ত কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে আসছেন। মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, শারমিন জাহানের ভয়ে একদিন কয়েকজন কর্মচারী জেলা পরিষদ থেকে পালিয়ে গেছে।
জাহানারা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি প্রায় ২ বছর ধরে মাস্টাররুলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহীর বাসভবনে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছি। কেউ কখনও আমাকে খারাপ কিছু বলেনি। কিন্তু শারমিন জাহান আসার পর থেকেই কাজে ভুল হওয়ার অভিযোগে খারাপ ব্যবহার করে আসছে। প্রতিদিনের মতো ১০-১২ দিন আগে সকালে শারমিন জাহানের বাসায় যাই। রুটি ও আলু ভাজি বেশি হওয়ায় তিনি আমাকে লাথি-ঘুষি ও চুল টেনে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। পরে কান্নাকাটি করে আমি ওখান থেকে এসে জেলা পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, পরদিন আবার গেলে শারমিন জাহান দাড়িয়ে থেকে তার কাপড়ে আমাকে দিয়ে মাড় দেন। এতে তার কাপড়ের হালকা রঙ উঠে যায়। এ ঘটনায় তিনি আমাকে প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে আমার ঘাঁড় ধরে লাথি-ঘুষি মারে। এমনকি অকথ্য ভাষায় গালমন্দও করেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
দারোয়ান কাম কেয়ারটেকার বলেন, প্রধান নির্বাহী শারমিন জাহান নতুন আসার পর প্রশিক্ষণে যাওয়ার জন্য একদিন উনার শাড়ি আয়রন করে দিয়েছি। পরে ব্লাউজ দিলে আয়রন করে আমি ভাঁজ করি। এতে কিছু না বলেই পেছন থেকে আমাকে থাপ্পর দেয়।
কারণ জানতে চাইলে বলেন, ব্লাউজ কেন ভাঁজ করেছি। এছাড়া খারাপ ভাসায় গালাগাল করে। এরপরও কয়েকবার তিনি আমার গায়ে হাত তুলেছেন। শুরু থেকেই তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে আসছেন।
এ ব্যাপারে জানতে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন জাহানের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া মেলেনি।
তবে লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, জাহানারাসহ দু’জন কর্মচারী তাদেরকে প্রধান নির্বাহীর মারধরের বিষয়টি জানিয়েছে। আমি সঠিক বিচার করব বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। এ ঘটনাটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। এ ধরণের ঘটনা যেন জেলা পরিষদে আর কখনও না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a reply