রাজশাহী ব্যুরো:
নির্যাতন ও ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) একজন এএসআইসহ তিন পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার আরএমপি কমিশনার হুমায়ুন কবীর বরখাস্তের এই আদেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আরএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (সদর)।
২৯ এপ্রিল রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার বরাবর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর ভাই।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, এএসআই শরীফুল ইসলাম, কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ও সুজন আলী। এদের সকলেই নগরের রাজপাড়া থানায় কর্মরত ছিলেন। অভিযোগের পর তিন দিন আগে তাদের আরএমপির পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছিল। এরপর তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হল।
লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে আরএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হবে। সেই তদন্তের পর সিদ্ধান্ত হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত কোন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রথম ধাপ বলেও তিনি জানান।
এদিকে, ভুক্তভোগীর ভাইয়ের করা অভিযোগ পত্র থেকে জানান যায়, ভুক্তভোগী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হরিপুর সাহাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত ২৪ এপ্রিল স্ট্রোক করে রামেকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। এরপর ২৮ এপ্রিল তিনি চিকিৎসা শেষে হাসপাতল থেকে রিলিজ নিয়ে তেরখাদিয়া স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাড়ের ডাবতলা এলাকায় তার বোনের বাড়ি যান। সেখান থেকে ঐদিন ভুক্তভোগী তার আত্মীয়ের সাথে রিক্সায় বেড়াতে বের হন।
এসময় অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই শরীফুল তার সাথে আরও সাদা পোশাকের কয়েকজনকে ২ থেকে ৩টি মোটরসাইকেলে করে এসে তার রিক্সা আটকে দেয়। মোটরসাইকেল এনটির নম্বর ‘রাজ মোট্রো ল ১১-০৪২২’। এ সময় তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে পকেটে থাকা ৩ হাজার টাকা কেড়ে নেয় ও বিকাশের মাধ্যমে ০১৭১০১৩৬১০৮ নম্বরে আরও ৪ হাজার টাকা নেয়।
পরবর্তীতে এই মোবাইল নম্বর ও মোটরসাইকেল নম্বর থেকে এএসআই শরীফুলকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। অভিযোগে আরও জানান হয়, বিষয়টি মিমাংসার জন্য অভিযুক্ত পুলিশের সদস্যরা ভুক্তভোগীকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে।
অভিযুক্তদের কর্মস্থল রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, তিন দিন আগে তাদেরকে থানা থেকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে বিষয়টি কী অবস্থায় আছে তা জানায়নি পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তবে অভিযুক্ত এএসআই শরীফুল ইসলাম নিজেদেরকে নির্দোষ উল্লেখ করে জানিয়েছেন, ঐ দিন ভুক্তভোগী এক নারীর সঙ্গে রিক্সায় অসামাজিক অবস্থায় ছিলেন। এসময় স্থানীয়রা তাদেরকে ধরে ও আমাকে খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। তাদেরকে উপস্থিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করতে একটা থাপ্পর দিয়ে ও বকাঝকা করে ওখান থেকে নিয়ে আসি। তবে সে সময় ছিনতাইয়ের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
Leave a reply