সারা বছর ঘাম ঝরিয়ে দু’বেলা দুমুঠো খেয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। উৎসব পার্বনে সন্তানদের একটু শখ আহ্লাদ পূরণ করাটা অনেক হতদরিদ্র বাবার জন্যই বোঝা। এসব ক্ষেত্রে পরিবারের সন্তানরা নিজেরাই দায়িত্ব তুলে নেয় নিজ কাধে। এমনি এক শিশু পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আসিফ।
আসিফ ঈশ্বরদীর মাজদিয়া মাদ্রাসাপাড়া গ্রামের কৃষক কুদ্দুস আলীর ছেলে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়ে সে।
হালকা-পাতলা গড়নের আসিফের আশা ঈদে সে একটি নতুন জামা তার বোনকে কিনে দেবে। সেজন্য সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে একটি ঝুড়িতে কয়েকটি বাঙ্গি নিয়ে বসে আছে শিশুটি, এগুলো বিক্রি হলে তার ছোট বোনের জন্য একটি জামা কেনা হবে এই আশায়।
শুক্রবার দুপুরে দরিদ্র কৃষক বাবার সন্তান আসিফকে এভাবেই দেখা যায় ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ওভারব্রিজ মোড়ে।
এই প্রখর রোদে বাঙ্গি নিয়ে বসে থাকার কারণ জানতে চাইলে ছোট্ট আসিফ জানায়, ঈদে সবার বোন নতুন জামা পরে বের হয়। তার বোনের নতুন জামা নেই। তাই ছোট বোন ইতির জন্য নতুন জামা কেনার আশায় বাঙ্গি নিয়ে বিক্রি করতে এসেছে সে।
আসিফ জানায়, তারা দুই বোন,এক ভাই। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট বোন ইতি নতুন জামার জন্য বায়না ধরেছে। তাই তার বায়না মেটাতে সকালে মাদ্রাসা ছুটির পর বাঙ্গি বিক্রি করতে এসেছে।
আসিফ প্রতিটি বাঙ্গি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি করছে। কিন্তু বাঙ্গি বেচে বোন ও নিজের জন্য নতুন জামা কিনতে পারবে তো আসিফ?
আর যদি না পারে তাহলে কি আসিফ ও তার বোন ঈদের আনন্দ করতে পারবে? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো জানা নেই আসিফেরও।
Leave a reply