৩০ বছর আগের কথা। তখন ভারতের মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদে মওলানা আজাদ কলেজে পড়ালেখা করতেন কেনিয়ার শিক্ষার্থী রিচার্ড নয়াগাকা টোঙ্গি। তিনি এখন কেনিয়ার পার্লামেন্টের সদস্য। তখন দেশ থেকে মা-বাবা পড়ালেখার যে খরচ পাঠাতেন, তাতে টেনেটুনে চলতে হতো টোঙ্গিকে। তিনি আওরঙ্গবাদের ওয়াংখেড়েনগর এলাকায় যেখানে থাকতেন, তার পাশেই ছিল কাশীনাথ গাওলি নামে এক মুদি দোকানির দোকান। এই দোকান থেকেই বাজার-সদাই করতেন রিচার্ড। আর্থিক সংকটের কারণে কাশীনাথের দোকানে ২০০ রুপি বকেয়া পড়ে ছিল। পড়ালেখা শেষে দেশে ফিরে যান রিচার্ড।
এর পর পেরিয়েছে বহু বছর। জীবনের নানা অধ্যায় পেরিয়ে রিচার্ড কেনিয়ার পার্লামেন্টের সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন। একদিন স্ত্রীর সঙ্গে স্মৃতি হাতড়ানোর সময় টোঙ্গির কথা মনে পড়ল ওয়াংখেড়েনগরের সেই বাসা আর কাশীনাথের দোকানের কথা। মনে পড়ল তার কাছে কাশীনাথের ২০০ রুপি পাওনার কথাও। তাই ছাত্রজীবনের সেই ঋণ শোধ করতে ৩০ বছর পর ভারতে এলেন তিনি। স্ত্রী মিশেলকে নিয়ে দেখা করলেন কাশীনাথের পরিবারের সঙ্গে।
সোমবার সাক্ষাতের সময়ে বারবার আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন দুজনে। বর্ষীয়ান কাশীনাথ বলেন, ‘সুদূর কেনিয়া থেকে ফোনটা পেয়ে বিশ্বাস করতে পারিনি।’
টোঙ্গি ও তার স্ত্রীকে হোটেলে নিয়ে বিশেষ আতিথেয়তা করতে চাইলেও টোঙ্গি কাশীনাথের বাড়িতেই ঘরোয়াভাবে আতিথ্য গ্রহণ করেন। দেশে ফেরার আগে কাশীনাথকে কেনিয়া যাওয়ার আমন্ত্রণও জানান রিচার্ড টোঙ্গি।
ভারতে এসে টোঙ্গি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। বললেন, ‘যখন আওরঙ্গবাদে থাকতাম, তখন আমার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো ছিল না। এই মানুষগুলো (কাশীনাথ পরিবার) আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তখনই মনে হতো, একদিন আমি তাদের পাওনা শোধ করব এবং তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাব। এখানে এসে আবেগ ছুঁয়ে গেছে আমাকে।’
পরে কেনিয়ার এই এমপি তার কলেজে গেলে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তিনি সেখানে স্মৃতিচারণ করেন। মতবিনিময় করেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
সূত্র: আনন্দবাজার
Leave a reply