ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একজন সহকারী কমিশনারের কক্ষের ড্রয়ার ভেঙে ৫ হাজার ইয়াবা চুরি করে ধরা পড়েছেন একজন কনস্টেবল। মামলার আলামত হিসেবে উদ্ধার হওয়া ওই ইয়াবাগুলো রাখা হয়েছিল সহকারী কমিশনারের ড্রয়ারে।
ওই কনস্টেবলের নাম সোহেল রানা। তার বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা হয়েছে। বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জাল হোসেন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মো. মোখলেছুর রহমান।
জানা গেছে, ৩৮ বছর বয়সী কনস্টেবল সোহেল রানা পুলিশে চাকরি করছেন ১৮ বছর ধরে। গত কয়েক বছর ধরে তিনি ডিবি কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের কাকনা গ্রামে। ইয়াবা চুরির ঘটনায় সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ডিবিসূত্রে জানা গেছে, গেণ্ডারিয়া থানার এক মাদক মামলায় গত ৩০ জুলাই চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসামিদের কাছ থেকে ৫ হাজার ইয়াবা জব্দ করা হয়। মামলার আলামত হিসেবে সেগুলো রাখা হয় মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এক সহকারী কমিশনারের কক্ষের একটি ড্রয়ারে।
১৬ আগস্ট রাতে ওই ড্রয়ার ভেঙে পাঁচ হাজার ইয়াবা চুরি হয়। পর দিন বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও দেখে কনস্টেবল সোহেল রানাকে শনাক্ত করা হয়।
পরে তার বাসায় গিয়ে বিছানার নিচ থেকে ইয়াবাগুলো পাওয়া যায়। চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি স্ক্রু ড্রাইভারও পাওয়া যায় সেখানে।
এ ঘটনায় রমনা থানায় একটি মামলা করেন ডিবি পরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন খলিফা। কনস্টেবল সোহেল রানাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে তোলা হয়।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক নিজামউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সোহেলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিলেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক অশোক কুমার সিংহ। শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।
উপকমিশনার মোখলেসুর রহমান বলেন, সোহেল রানা প্রথমে ইয়াবা চুরির কথা অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তা স্বীকার করে নিয়েছেন। সোহেল জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, তিনি সেদিন রাতে ডিবি অফিসে ঢোকেন এবং সহকারী কমিশনারের অফিসের ড্রয়ারের তালা ভেঙে ৫ হাজার পিস ইয়াবা চুরি করেন। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক বাসায় গিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো উদ্ধার করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে উপকমিশনার মোখলেস বলেন, সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার অতীত রেকর্ড তারা খতিয়ে দেখেছেন। ডিউটিতে হাজির না হওয়ায় একবার তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অপরাধের রেকর্ড ছিল না।
Leave a reply